ভাবনা যখন গতি পায়
আমাদের একজন শুভাকাঙ্খী পরামর্শ দিয়েছিলেন, একটা ওয়েব ম্যাগাজিন বার করুন যেখানে স্থানীয় খবর থাকবে। জানতে চাইলাম, সেটা বস্তুত কী? খায় না মাথায় দেয়? উনি বললেন, "এরকম ম্যাগাজিন দেখেছি, কিন্তু কিভাবে শুরু করতে হয়, কে এই ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে, তার কিছুই জানা নেই"।
ভারটা যখন আমার ওপর পড়ল, ভাবলাম, 'অন্যরা যখন পারে, আমরাই বা পারব না কেন?' ধীরে ধীরে ওয়েবসাইট, ডোমেইন, সার্ভার, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট আপলোডিং, ভিডিও - এই সমস্ত শব্দ, যা আমার কাছে ল্যাটিন, হিব্রু তার সঙ্গে পরিচিত হতে থাকলাম। ওয়েবসাইট কারা করে জানার জন্য যাদের যাদের কাছে গিয়েছি, তাদের বলেছি, "Whenever we have come near to the bridge, we must crossover the bridge."
স্থানীয় সংবাদ থেকে শুরু করে কবিতা, গল্প ও অণুগল্প, প্রবন্ধ, বিবিধ ফিচার, মুক্তগদ্য, পুস্তক সমালোচনা, ভ্রমণকাহিনী, চিত্রকলা, শব্দছক, এমনকি ধারাবাহিক উপন্যাস এসে জড়ো হয়ে সমন্বয় ই-মাসিক পত্রিকাকে পূর্ণাঙ্গ সাহিত্য পত্রিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। এই পরিসরে সময় নিয়েছে মাত্র একটি বছর, সাকুল্যে মাত্র ১২টি সংখ্যা।
বিগত এক বছরের সালতামামি করতে বসলে দেখা যাবে, অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে প্রাপ্তি 'কিঞ্চিত মাত্র'। আর বাকি সবই মনে হয় অচেনা, অজানা থেকে গেছে। কোনোদিনও জানা যাবে কিনা তাও জানিনা। কিছুটা আলোর সন্ধানে, আজও অবিরত অন্ধকারে হাত, পা ছুঁড়ে চলেছি। তবে প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তালিকাটিও দীর্ঘ, অপর্যাপ্ত। বহু লেখক, কবি, শিল্পীর সান্নিধ্য পেয়েছি, যা অভাবিত। তাঁরা আমাকে যেমন ঋদ্ধ করেছেন, তেমনি আমাদের পত্রিকাকে ততোধিক মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
একটা কথা আমরা খোলাখুলি বলতে চাই, আমাদের এই মাসিক ই-পত্রিকা মূলত নতুন লেখকদের জন্য, স্বল্প পরিচিত লেখকদের জন্য, আর কিছুটা অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত লেখকদের জন্য। সাধারণ লেখক, সাধারণ পাঠক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আমরা বিচরণ করতে বেশি স্বচ্ছন্দ। কে বলতে পারে, এখান থেকেই আগামীদিনের জীবনানন্দ দাশ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় উঠে আসবে না?
ভালো কাজের ক্ষেত্রে সময় অদ্ভুত ধরনের দ্রুতগামী। কী করে যে 'সমন্বয়'-এর একটা বছর কেটে গেল, বুঝতেই পারলাম না। বিগত বছরে 'সমন্বয়' পত্রিকার মানোন্নয়নে যে সমস্ত লেখক, কবি, শিল্পী, বিজ্ঞাপনদাতা এবং প্রযুক্তি ও প্রচারে যুক্ত মানুষেরা যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁদের সকলের প্রতি 'সমন্বয়' পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলী অকুণ্ঠ চিত্তে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে এবং করতে থাকবে।
১৫ জানুয়ারি, ২০২৪