সম্পাদকীয়

 

আর. জি. কর মেডিক্যাল কলেজে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। একজন তরুণী ডাক্তার নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। সবাই দোষীর চরম দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন। সরকার পক্ষ, বিরোধী পক্ষ, সাধারণ মানুষ সবাই চাইছে, দ্রুত অপরাধী চিহ্নিত করে কঠোরতম শাস্তি বিধান করা হোক। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল।

এরপর শুরু হলো গুজব ছড়ানো, সোস্যাল প্ল্যাটফর্মে বিপ্লব, মিডিয়া ট্রায়াল, বিশেষকরে আনন্দবাজারের ডাক, 'মেয়েরা রাত দখল করো'। নেতৃত্বহীন এই আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে সেই রাতে আর জি করে ভাঙ্গচুর হলো, তান্ডব চললো, কোটি টাকার ওপর সম্পত্তি নষ্ট হলো, সাতজন পুলিশ কর্মচারী আহত হলেন। এর দায় আজ আর কেউ নিচ্ছে না। অবিমৃশ্যকারিতার ফল উচ্ছৃঙ্খলতা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না, হবেও না।

এতক্ষন এতোসব কথা ছিল মামুলি। আসলে আমরা আজ অনেকেই ঠিক নেই। আমরা যারা রেল, প্রতিরক্ষা, ইনকাম ট্যাক্স, কাস্টমস, সেলস ট্যাক্স, সরকারী দপ্তর, পুর নিগমে কাজ করি বা কোনো বিশেষ কাজের সূত্রে গিয়ে দেখেছি, সর্বত্র একটা র‌্যাকেট (Racket) কাজ করে চলেছে। একসময় তো কোলকাতা কর্পোরেশনের নাম ছিল চোরপোরেশন।

আমাদের সমাজে করাপশন ও ক্রাইম যমজ ভাইয়ের মতো অবস্থান করছে। সে কারণেই পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় ওপরের দিকে আছে আমাদের দেশ। এই মুহূর্তে যদি করাপশনকে সমাজ থেকে দূর করা সম্ভব নাও হয়, অন্তত খুন, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে, অপরাধীকে দ্রুত ক্যাপিটাল প্যানিশমেন্ট দিতে হবে।

খুবই দুর্ভাগ্যের সঙ্গে আজ দেখতে হচ্ছে, যিনি টেবিলের তলা দিয়ে ঘুষ দিলেন আর যিনি ঘুষ নিলেন অথবা যার শ্লীলতাহানি হলো আর যিনি শ্লীলতাহানি করলেন, দু'জনেই মোমবাতি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। আসলে সর্ষের মধ্যে ভূত! তাড়াবে কে?


১৫ আগস্ট, ২০২৪