সম্পাদকীয়

 

কলকাতা বইমেলা, ২০২৫

কলকাতা বইমেলা। ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা শুরু হচ্ছে ২৮শে জানুয়ারি থেকে, চলবে ৯ই ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। এ মেলা আর পাঁচটা মেলার মতো নয়। যেখানে থাকে শুধু মানুষের মিলনক্ষেত্র আর নির্ভেজাল বাণিজ্য। বইমেলা সেক্ষেত্রে একেবারেই ব্যতিক্রমী। এখানে থাকে মানুষের আবেগ, তাদের ভালোবাসা আর সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তাদের জ্ঞানলাভের অভিলাষ।

মানুষের জানার ইচ্ছা চিরন্তন। জানার দুটি মাধ্যম। শিক্ষক এবং বই। শিক্ষক জ্ঞানচক্ষু খুলে দেয়, সেই চোখ দিয়ে বইয়ের মাধ্যমে সারা বিশ্বকে দেখি, জানি। ব্যক্তি মানুষের জীবনের ক্ষেত্রে শিক্ষক হয়ত ক্ষণস্থায়ী, বই সেক্ষেত্রে চিরস্থায়ী।

মেলার সংজ্ঞার মাননিরূপকে প্রাথমিক শর্ত হলো জনসমাবেশ। বই মেলার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা উৎকৃষ্টতম। পৃথিবীজুড়ে অন্যান্য মেলার পরিসরেও অন্যতম। এটা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য, এই মেলায় যাদের পদধূলি পড়ে, তাদের অধিকাংশই জ্ঞানপিপাসু। সমাজের প্রথম সারির লোকেদের আনাগোনা এই মেলাকে করেছে বিশ্ববাসীর কাছে অত্যন্ত আগ্রহের এবং কৌতূহলোদ্দীপক।

এই কৌতূহলের একমাত্র কারণ জাতি হিসেবে বাঙালি আদ্যন্ত শিল্পানুরাগী। সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টির অঙ্গনে বাঙালি তার অবদান রেখেই চলেছে। অত্যন্ত ব্যতিক্রমী এই চরিত্র তাকে বিশ্বের বুকে মহান করেছে।

পরিশেষে একটা কথাই সোচ্চারে বলতে চাই, বাঙালি হিসেবে আমরা অনেকেই সঠিক অর্থে আজও সেই বাঙালি হতে পারিনি যারা অবিরত সমাজকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আমি জানি, এটা আমার মতো অনেকের সীমাবদ্ধতা, প্রচেষ্টা থাকলে একদিন পথ পাব, এই বিশ্বাসে স্থির হয়ে আমরা আজও বেঁচে আছি।

আশাকরি ২০২৫-এর বইমেলায় সমাজের অগ্রচারী অংশের বিদ্যৎজনদের সমাবেশ আমরা অবশ্যই দেখতে পাবো। আরো দেখতে পাবো সাহিত্য, শিল্পের বিভিন্ন অঙ্গনে মনোজ্ঞ সব আলোচনা। এছাড়া থাকবে বই প্রকাশ অনুষ্ঠান, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, বইয়ের জন্য হাঁটা, চিত্রশিল্পীদের সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞান সচেতনতা মঞ্চ। এখানেই রয়ে গেছে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার সমাজের প্রতি নিরন্তর দায়বদ্ধতা, এখানেই তার সার্থকতা, এখানেই সে অনন্য।


১৫ জানুয়ারি, ২০২৫