১৭২৩-২৪ সালের মধ্যে এটি নির্মাণ করেন মুর্শিদকুলি খাঁ তাঁর বিশ্বস্ত কারিগর মুরাদ ফরাস খাঁ-কে দিয়ে। তিনি ঢাকা থেকে রাজধানী স্থানান্তর করার সময় নিজের নামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নামকরন করেন মুর্শিদাবাদ। 'কাটরা' শব্দটি মানে বাজার। অনুমান এখানে একটি বড় বাজার ছিল।
১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মসজিদটি ভীষনভাবে ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়। Archaeological Survey of India'র তত্ত্বাবধানে এখন এভাবেই দাঁড়িয়ে রয়েছে।
পূর্বদিকের চৌদ্দটি সিঁড়ির নিচে তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তিনি সমাধিস্থ হয়ে রয়েছেন। নামাজ পড়তে আসা পুন্য মানুষের পদদলিত হয়ে এ'জন্মে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে চলেছেন। ইতিহাস বলে তিনি ছিলেন বর্ণহিন্দু। নাম সূর্যনারায়ন মিশ্র। হাজি সাফি ইসফাহানি নামে ইরানের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ক্রীতদাস হিসাবে ক্রয় করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেন। নূতন নাম হয় মির্জা হাদী। ইরানের ওই সময়ের প্রচলিত শিক্ষাগ্ৰহন করার সুযোগ আসে তাঁর জীবনে।
ভারতে ফিরে যোগ্যতার নিরিখে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সুনজরে থেকে হয়ে ওঠেন মুর্শিদকুলি খাঁ।
ইতিহাসের পাতায় এক উজ্জ্বল চরিত্র হয়ে বেঁচে থাকবেন দুটি কারনে। সুরা ও নারী থেকে সমদূরত্ব বজায় রেখেছিলেন সারাজীবন। একটিমাত্র বিবাহ করেছিলেন নাসিরি বানু বেগম সাহেবা-কে। দুটি কন্যা ও এক পুত্রের পিতা ছিলেন। মৃত্যু হয় ৩০শে জুন, ১৭২৭।
মৃত্যুর ২৯৬ বছর পরেও কাটরা মসজিদটি এখনও তাঁর কীর্তিকে বহন করে চলেছে।
বোধহয় কিছু মানুষ এভাবেই অমরত্ব লাভ করেন তাদের সৃষ্টির মাঝে...
ক্রীতদাস থেকে বাংলার নবাব - এ যেন রূপকথার গল্পকেও হার মানায়।
আলোকচিত্রঃ লেখক।