কবিতা

মহামারী



নাজমিন নাহার লাবনী (বাংলাদেশ)


ঈশ্বরের দেয়া আয়ুষ্কাল যদি সম্পূর্ণ ভোগ করতে পারি
তবে বৃদ্ধ বয়সে আপনাদের গল্প শোনাবো।
বেঁচে থাকার গল্প।
করোনা নামক মহামারীর পৃথিবীতে কিছু মানুষের টিকে থাকার গল্প।

পৃথিবীতে তখন শুধু করোনা নামক মহামারীই ছিলো না
বরং বিষন্নতা নামের এক ভয়ংকর ব্যাধিও ছিলো।
করোনা ছিল ঘোষিত মহামারী আর বিষন্নতা ছিলো অঘোষিত মহামারী।

কিছু মানুষ করোনা নামের মহামারীতে মারা গিয়েছিল
আর কিছু মানুষ বিষন্নতা নামের মহামারীতে নিজেদের মেরে ফেলেছিল।
মৃত্যু মাত্রই ভয়ংকর।
সেটা শরীরের রোগে হোক কি মনের রোগে।

করোনা নামের অসুখ তবুও বাঁচিয়ে রাখতো কিংবা মেরে ফেলতো।
আর বিষন্নতা নামের অসুখ না বাঁচিয়ে রাখতো না মরে যেতে দিতো।
ভীষণ ভাবে ভেঙ্গে মানুষগুলোকে জীবন্ত লাশ হিসেবে রেখে দিতো।

এরপরও

সমাজের চোখে কাপুরুষ আর ঈশ্বরের চোখে মহাপাপী হওয়ার ভয়কে উপেক্ষা করে,
কিছু মানুষ আত্মাকে মুক্ত করে দিতো আত্মহত্যা নামক প্রক্রিয়ায়।

এদের মধ্যে কিছু মানুষের মৃত্যুর দিকের যাত্রাটা যদিও বা দেখা যেত
আর কিছু পাহাড়ের মতো ব্যক্তিত্বের মানুষ পাথরের টুকরোর মতো টুপ করে ডুবে যেত।

এই দুই মহামারীতে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে হতে

অবশেষে

একদিন ঘোষিত মহামারী বিদায় নিল।
আর অঘোষিত মহামারী রয়েই গেল।

মহামারীর পরের নতুন পৃথিবীতে যেদিন বেঁচে থাকা লোকদের তালিকা দেখতে গেলাম,
খুব অদ্ভুত ভাবে লক্ষ্য করলাম,
মহামারী কোন জীবিত মানুষ রেখে যায়নি,
বরং রেখে গিয়েছে কিছু জীবন্ত লাশ।