পার্কের মাঝামাঝি একটা কদম গাছ। তার গুঁড়ি ঘিরে সিমেন্টের গোল বেঞ্চি। মাটিতে গাছের ছায়া যখন আবছা হতে শুরু করে, তখন ওরা জড় হয় একে একে।
সন্ধ্যা, আরতি, মালতী, কিরণ, চাঁপা, কমলি। মালতী হয়তো বলল, আবার তার বর তার সব টাকা কেড়ে নিয়েছে। সন্ধ্যা বলল, তার মাতাল বর তাকে সোহাগ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে। চাঁপা দিল মুখুজ্যে গিন্নির খ্যাঁক খ্যাঁকের বিবরণ। আরতি জানাল, বোস পুত্রের আবার বাঁদরামির চেষ্টা। শুনেই ঝাঁঝিয়ে উঠল কমলি, চপ্পল বসাতে পারিসনা হারামিটার গালে? আর কিরণ দেখাল, তার পিঠ ভর্তি অত্যাচারের দাগ। কেউ হাউ হাউ কাঁদল, কেউ ফ্যাঁকাসে হাসল। তারপর হাল্কা হয়ে যে যার বাড়ি ফিরে গেল, আবার কাল দেখা হবে বলে।
তখন পার্কের চতুঃসীমায় শান বাঁধানো ফুটপাতে, উচ্চবিত্ত বাড়ির ভারী-ভরকম বাসিন্দারা, মান-অপমানের গরল গলায় নিয়ে, ঈর্ষা-বিদ্বেষ মনেতে লুকিয়ে, ঠোঁটে মিথ্যে মুচকি হাসি ঝোলানোর ভারী বোঝা হৃদয়ে চাপিয়ে, দৌড়াচ্ছে-হাঁপাচ্ছে, হাঁপাচ্ছে-দৌড়াচ্ছে, ওজন কমানোর জন্য...