কবিতা

জাতের বাড়ি



শংকর হালদার


জাতের বাড়ি খুঁজতে খুঁজতে জলের কাছে এলুম
জল বললে -
আমি খাল-বিল-নদী-সাগর সব্বাইকে নিয়ে
সবার উঠোনে খুঁজলুম
দেখলুম ঘাসের মাথায় বাতাসেরা হাততালি দিচ্ছে
ওরা বললো, ওরাও নাকি খুঁজছে।

খুঁজতে খুঁজতে পাখির বাড়ি গেলুম
পাখি বললে -
গোলাম মোরশেদের মাচার লাউ আর
পিল্লাই মুচির পুকুরের চিংড়ি খুব করে মজাচ্ছে
মুখুজ্যে বাড়ির বড় বউয়ের রান্নার পিসি
গন্ধ'টা তো বেশ পেলুম
কিন্তু জাত'কে তো একবারও দেখলুম না।

আবার খুঁজতে খুঁজতে এবার একটা গরুর কাছে গেলুম
সে বললে -
আমি তো বাপু সব জমিতেই ঘাস খাই
আমার গোবরে সবাই দেখি ঘুঁটে বানায়
আমার দুধে পীরের সিন্নি আর সত্যনারায়নের পুজো দিচ্ছে
আর আমার পেচ্ছাপে তো সব শুদ্ধি।

শেষে এক ফকির'কে ডেকে বললুম -
একতারা হাতে ঘুরতে ঘুরতে
তিনকাল গিয়ে তো এককালে ঠেকলো
ফি তিন বছর অন্তর তো বোষ্টুমি পাল্টালে
নেই নেই করে তো প্রায় এক কুড়ি ছেলেপিলে
ধূলো ঘেঁটে ঘেঁটে তো পায়ের গায়ে হাজার সড়ক গজালো
বলি এবার জাতের বাড়ির খবরটা দাও দেখি।

এই না শুনে ফকির
দু'হাত তুলে ধেই ধেই করে নাচতে শুরু করলে
হঠাৎ নাচ থামিয়ে বললে -
যে ভাষাতেই আর যে কালিতেই ছাপো না কেন
এক কাগজেই ছাপতে হবে
সব সাদা বুঝলে হে - সব সাদা...