কবিতা

মৃত্যুতে যাঁর অন্য জন্ম



সঙ্ঘমিত্রা কুমার


শ্রাবণ আবারো এসেছে কবি।
বর্ষা নেমেছে। কালো মেঘ দল বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে বার বার
তোমার পায়ের চিহ্ন তবু সে মোছাতে পারে কই?
কত বার কত বাইশ আসে, যায়
তবু তারা সংখ্যা হয়েই থাকে।
যত মেঘ যত দিন ধরে অভিমানে কেঁদেছে
তবু তারা তোমার কষ্টের কাছে বড় ম্লান
যত যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়েছো ততই কালির কথারা
তীব্র হয়ে বসেছে সাদা পাতায়
তুমি কবি হোলে,
সবার মনের আলো হয়ে কিরণ দিলে,
সবার মনে বৈশাখের রোদ শ্রাবণের কালো মেঘকে এতটুকু
জায়গা ছাড়তে নারাজ।
জোড়াসাঁকো আর শান্তিনিকেতন ছাড়িয়ে তুমি তখন
হৃদয়পুরে মনের রাজা।
সব অনুভবে মিশে কবি তখন প্রাণের রবি;
সেখানে কান্নারা কপোলের আহ্লাদ চাইলেও
তোমার তৈরী শব্দরা, কথার শৈলীরা
মিলিয়ে মিশিয়ে নতুন করে বাঁচতে শেখায়
ভাবতে শেখায়।
তাই তো শ্রাবণ মুক্ত পাখি...
মুক্তি মানে তো মৃত্যু নয়?
প্রাণের কবির যে মৃত্যু নেই কোনো দিন
যিনি প্রাণের অধিশ্বর তিনি যে শ্রাবণের বহু ঊর্দ্ধে!
আমার শ্রদ্ধার নিতান্ত গন্ধহীন ফুল
আজও তোমার পায়ে রেখে দিলাম ঠাকুর
যে ঠাকুর প্রাণের দেবতা,
যে কবির কবিতা বাঁচার অযুত শক্তি,
যাঁর উপলব্ধি চেতনার গ্রন্থিতে ঘা দিতে পারে
শ্রাবণের সাধ্য কি তাকে নিয়ে যাবার!
মনের অলিন্দ রবির আলোয় আলোকিত
এসো কবি, ভরে দাও আলোর রেণু
শ্রাবণ লজ্জা পাক কবিকে হারানোর ব্যথা দিতে
শুধু বৃষ্টি হয়েই ঝরুক সে
কবি ছিলেন, কবি আছেন
রবি যে বাদলের মেঘ সরিয়েও আলো দিতে জানে।