সত্তর টাকায় বিরিয়ানি, সঙ্গে চিকেন চাপ ফ্রি।
- মরা মুরগীর বিরিয়ানি নাকি বিশে দা?
- কাওয়া বিরিয়ানি।
হা হা করে হেসে উঠলো দোকানের দুজন কর্মচারী ঘন্টু আর টোটন।
এই ঠাট্টায় যোগ দিল না বিশে। পাস কোর্সে বি এ পাশ করে কয়েক বছর ডাটা এন্ট্রির কাজ করেছিল বিশ্বনাথ বিশ্বাস একটা প্রাইভেট ফার্মে।এরপর একটা স্টার্ট আপ বিজনেস হিসেবে এই ব্যবসাটা মাথায় এসেছিল। বন্ধুদের সোর্সে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দুটো কারিগর জোগাড় করেছিল। তারপর খুলেছিল ঘর ভাড়া নিয়ে এই বিরিয়ানির দোকানটা যার নাম রেওয়াজি বিরিয়ানি। ঠিক পাশের ঘরটাতেই ছিল একটা বিরিয়ানির দোকান। বেশ চলত । রীতিমতো চ্যালেঞ্জ করে খুলেছিল দোকানটা।সফল হয়েছিল বিশে।এক মাসের মধ্যে বিক্রির অভাবে অন্য বিরিয়ানির দোকানটা বন্ধ হয়ে যায়। আর তার দোকানে ভিড় বাড়তে থাকে। একরকম নিশ্চিত ছিল সে ব্যবসার আরো শ্রীবৃদ্ধি সম্বন্ধে।
কিন্তু আজকে আবার একটি দোকান উদ্বোধনের ঘোষণা।তাও আবার তার দোকানের পাশে। কী করে দেবে মাত্র সত্তর টাকায় এক প্লেট বিরিয়ানি। সাথে আবার চিকেন চাপ। সেটা অবশ্য আজকেই দেবে। তার দোকানে চিকেন বিরিয়ানি একশো টাকা। এর কমে দিলে কোয়ালিটি মেনটেন করা যায় না। সারাদিন ধরে হিসেব করছে বিশে।
অবশেষে সন্ধ্যা এল। এই সন্ধ্যাটা কঠিন। ব্যবসার পার্মানেন্ট খদ্দের বলে কিছু নেই, বিশে জানে। আজ পাশের দোকানে লম্বা লাইন দেখে বিশের মনে পড়ছে গেল বছরের দোকান উদ্বোধনের কথা। মাথার মধ্যে দপদপ করছে বিশের । আজকে তার দোকানের সামনে তার কাস্টমাররাই তার বিরিয়ানি কিনছে না। হয়তো ভাবা যেতেই পারত ফ্রি দিচ্ছে বলেই এই ভিড়। কিন্তু না। বিশের মাথায় ঘনিয়ে আসা মেঘটা স্পষ্ট ও স্থির। এই প্রতিযোগিতা জাত শত্রুতার নামান্তর। সংবাদপত্রে একটা প্রতিবেদনে পড়েছিল বিশে, হিস্ট্রি রিপিটস!
একথা প্রকাশ্যে উচ্চারণ করা গেল না। কারণ, কর্মচারীরা তো এর কিছুই বুঝবে না।