উত্তরাধিকার সূত্রে এ গাদা বন্দুক এখন আমার।
জমিদারির ভোগস্বত্ব বিলোপের পর
এখন বন্দুকখানাই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।
দেয়ালে টাঙানো থাকে
আমার পূর্বপুরুষদের তেলরঙ ছবির পাশে।
মাঝে মাঝে অবসর দিনে
ঝাড়পোঁছ করি ছবিগুলোর সংগে বন্দুকের।
বন্দুকের ঘাড় ভেঙে লম্বা কাঠের মাথায় ন্যাকড়া বেঁধে
তেলে ভিজিয়ে ঢুকিয়ে নল মসৃণ করি।
আর মাঝে মাঝে এক চোখ বন্ধ করে নলের ভিতর দিয়ে দেখি -
যেন এক টিপেই শত্রু বিনাশ ঘটবে।
উত্তরাধিকার সূত্রে বন্দুকটা পাওয়ার পর
দুবার ব্যবহার করেছি,
একাত্তরে বাংলাদেশ উত্থান আর
বিরানব্বইয়ের সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলার সময়।
দুবারই শূন্যে ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি
আমরা আছি,
জমিদারির ঐতিহ্য স্বমহিমায় বিরাজ করছে।
অথচ দ্যাখো, বাড়ির পিছনে তাল পুকুরে
এখন যে কেউ এসে স্নান করে, মাছ ধরে।
বাড়ির চারপাশে বন-বাদাড়ে রাত হলেই
হিসহিস শব্দ আর ঝিঝিপোকার ডাক।
যেন আমার পূর্বপুরুষগণ
অশনিসংকেত দিয়ে বলছে- সাবধান!
বন্দুক প্রস্তুত রাখ।
আমি আগলে বসে থাকি বন্দুকখানা;
আর মাঝে মাঝে বন্দুকের ঘাড় ভেঙে
তেল দিয়ে গুলি যাওয়ার পথ মসৃণ করি।
এক চোখ বন্ধ করে নলের ভিতর দিয়ে দেখি,
ঐতিহ্যের সীমারেখা কতদূর।
বন্দুকটাকে বৃদ্ধ বাবা মায়ের মত যত্ন করি,
বন্দুকটাও আমাকে হরপ্পা মহেঞ্জোদারো প্রদর্শন করে।