আমাদের সাথে একটা মেয়ে ভর্তি হয়েছিল, ওর নাম আলো। নাম শুনে মনে হয় বিধাতাপুরুষ একটু ব্যতিক্রমী দৃষ্টিতে এদের দেখবেন। নামটি আলো হলেও ওর এই অল্প দিনের জীবনের পুরোটাই অন্ধকারে পূর্ণ। দুটি পা প্রায় অকেজো, একটা হাত প্রায় না থাকার মতো আর চোখের দৃষ্টি পুরোপুরি স্বচ্ছ নয়। গভীরভাবে ভেবে দেখলে বোঝা যায় আলো না হয়ে ওর নাম তমসা বা আঁধার হওয়া উচিত ছিলো। জ্ঞান হওয়ার অনেক আগেই ওর বাবা পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন। ছোটো ভাইয়ের বয়স তখন মাস চারেক হবে, লোকের বাড়িতে রান্নার কাজ করে ওর মা ওদের দু’জনকে বড়ো করে তোলার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে তাঁর শরীরের অবস্থাও বিশেষ ভালো নয়। নানান সমস্যায় তিনিও জর্জরিত, রোগাক্রান্ত জীর্ণ শরীর তাঁর। ওষুধের থেকে পথ্যের প্রয়োজন বেশি কিন্তু কে তার জোগান দেবে?
আলোর সাথে কথা বলে মনটা বিষণ্ণ ও আর্দ্র হয়ে উঠলো। আলো জানালো যে, একজন ডাক্তারবাবুর বদান্যতায় সে কলেজে ভর্তি হতে পেরেছে, নাহলে তার পড়াশোনা এখানেই থেমে যেত। বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য তাঁর একটি সংস্থা আছে। তিনি বলেছেন, উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ করলে তাঁর সংস্থায় তাকে একটা কাজ দেবেন। তাই যত কষ্টই হোক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তাকে পাশ করতেই হবে। আলোর দুঃখময় জীবনের ইতিহাস শুনে মনে পড়ে শিউলির কথা। শিউলি আমার জীবনে একটা ক্ষণিকের ঝোড়ো হাওয়ার মতো। তখন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আমি, শিউলি আমার সহপাঠী। ওর বাবা বাজারে আইসক্রিম বিক্রি করতেন। শীতের সময় আইসক্রিম বিক্রি কম হয়, তাছাড়া গাঁ গঞ্জে তেমন একটা আইসক্রিম খাওয়ার চল নেই, তাই শীতের সময় শিউলির বাবা চপ-সিঙাড়া, মুড়ি, পিঁয়াজির দোকান দেন। কোথাও মেলা বসলে সেখানেও তেলেভাজার দোকান নিয়ে বসেন। এগুলোর এখানে ভালো চাহিদা। কিন্তু ওর বাবার হাতে তেমন টাকা নেই তাই ইচ্ছে থাকলেও ব্যবসা বড়ো করতে পারেন না। একবার গাইঘাটা থেকে চানাচুর আর পাঁপড় তৈরির কৌশল শিখে এসেছিলেন। বাড়িতে বসে পরিকল্পনা করলেও সেই ব্যবসা শুরু করতে পারেননি। শিউলির বাবা মাঝে মাঝে আমার বাবার কাছে আসতেন, বাবার কাছে গল্প করতেন, পরামর্শ নিতেন। তাঁর অভাবের কথা, সাংসারিক সমস্যার কথা, ছেলে মেয়ের পড়াশোনার জন্য তাঁর দুশ্চিন্তার কথা - সব বলতেন। শিউলিকে তিনি বড্ড ভালোবাসতেন, ওর মধ্যে যে একটা বিরাট সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে সেটা বাবাকে বলতেন। ক্লাসে শিউলি আর আমার মধ্যে একটা ঠাণ্ডা প্রতিযোগিতা চলতো। আমার লক্ষ্য থাকতো শিউলির কাছে পরাজিত হবো না আর শিউলি ভাবতো কীভাবে জয়কে প্রথম স্থান থেকে সরানো যায়। আমাদের মধ্যে স্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকলেও সেটা ক্লাস ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো, ওটা কখনো বাইরে প্রকাশ পেত না। ক্লাস ঘরের বাইরে আমরা ছিলাম ভালো বন্ধু। তখন বন্ধু কথাটার সত্যিকারের অর্থ আমাদের কাছে প্রকাশিত নাহলেও শিউলি যে আমার একজন ভালো সাথী সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ ছিলো না। স্কুলে যতক্ষণ থাকতাম ততক্ষণই আমরা একসাথে থাকতে পছন্দ করতাম। সাধারণত আমি স্কুল কামাই করতাম না। শিউলি মাঝে মাঝে আসতো না। ওর মায়ের অসুস্থতার জন্য ও স্কুলে আসতে পারতো না। ওই অতটুকু বয়সে ওকে বাড়ির অনেক কাজ করতে হতো। শিউলিদের বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ির দূরত্ব খুব একটা বেশি নয় তাই ও স্কুলে না এলে বিকেলের দিকে আমি আর আমার আর এক সহপাঠী বিপুল একসাথে শিউলিদের বাড়ি চলে যেতাম।
শিউলির ছোটো দুই ভাই ছিলো। ছোটো ভাই পৃথিবীতে আসার পর থেকেই ওর মায়ের শরীরে ঘুণপোকা বাসা বাঁধে, কী এক অদ্ভুত ধরনের রোগ ওর মাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। ডাক্তারবাবু বলেছিলেন - এটাকে বলে ক্ষয়রোগ, যক্ষা। সাধারণত অতিরিক্ত অপুষ্টির কারণে এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। ভালো পুষ্টিকর খাবার পেলে এবং নিয়মিত ওষুধ খেলে এই রোগ সেরে যায়। কিন্তু তার জোগান দেবে কে? লাখ টাকার প্রশ্ন, কে দেবে? আমার বাবার কাছে এসে শিউলির বাবা গল্প করতেন। আমি কান খাঁড়া করে শুনতাম। শুনতে শুনতে চোখে জল এসে যেত। বাবা বলতেন - এই অভাব, এই দারিদ্র্য, এই বৈষম্য মানুষেরই সৃষ্টি। এ কোনো ঐশ্বরিক ব্যাপার নয় মাধব। আমরা এই অবস্থার শিকার। সমাজে যাদের অর্থ, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি বেশি তাঁরাই সবকিছু ভোগদখল করে। দেশের সরকারও তাঁদের পক্ষে কথা বলেন, তাঁদেরকে বেশি সুযোগ-সুবিধা দেন। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো না খেয়ে মরে গেলেও তাঁদের দিকে তাকাবার কেউ নেই। সমাজে কিন্তু এদের সংখ্যাটাই বেশি অথচ এরাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। এদের পক্ষে যাঁরা কথা বলেন তাঁদের স্থান হয় অন্ধকারের কোনো এক অন্তরালে। আমি অতশত বুঝতাম না। বাবার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলতেন - এখন তোমার সে বয়স হয়নি বাবু, লেখাপড়া শেখো অনেক বড়ো হও, তখন সবকিছু জানতে ও বুঝতে পারবে।
বাবার কথা শুনে বুঝতাম আমাকে অনেক বড়ো হতে হবে, অনেক জ্ঞানী হতে হবে। সামাজিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য কী তা জানতে হবে। মাধবকাকু কেবল চোখের জল ফেলতেন। বাবা সান্ত্বনা দিয়ে বলতেন - মাধব ওঠো চোখের জল মোছো, প্রতিদিন নতুন নতুন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হও। এভাবে চোখের জল ফেলে কিছু হবে না ভাই। এ পৃথিবীতে কেউ কারো জায়গা ছেড়ে দেয় না। প্রত্যেককে তার নিজের জায়গা তৈরী করে নিতে হয়।
বিকেলে শিউলিদের বাড়ি গেলে মাধব কাকার বিষণ্ণ মুখটা দেখে মনটা ভারী হয়ে যেত। দেখতাম শিউলি হয়তো দুপুরের এঁটো থালাবাসনগুলো মাজতে বসেছে অথবা ছোটো একটা বাটিতে ভাত মেখে মাকে পরম মমতায় খাইয়ে দিচ্ছে। আমরা নীরবে সেই মমতাময়ী দৃশ্য দেখছি। মায়ের প্রতি ওর এতটা ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যেতাম। পড়াশোনার পাশাপাশি সমস্ত কাজ শিউলি হাসিমুখে একা হাতে এত অল্প বয়সে সামলাচ্ছে!
ওদের ওখানে গেলে ও আমাদেরকে বসতে বলে। আমরা ওদের রোয়াকে বসি। বিপুলদের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো। এ ব্যাপারটা ওর মনে কী প্রভাব ফেলতো বলতে পারি না, কিন্তু আমাকে বড্ড পীড়া দিত। বিপুলের বাবা খগেনবাবু আমাদেরই একটা জায়গা দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আছেন। সেখানে বড়ো একটা পুকুর কেটে মাছের চাষ করেন। মাঝে মাঝেই বাবা ব্যাপারটা নিয়ে খগেনবাবুকে বলেন। কিন্তু বাবার কথায় তিনি বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেন না। তাঁর সাফ কথা - ওই জায়গাটা আমারই দাগ ও খতিয়ানের মধ্যে পড়ে। অতএব ওটার অধিকার কেবল আমারই, পারলে তুমি আমার নামে মামলা করো। কোর্টে উঠুক তারপর বোঝা যাবে কোনটা কার।
উনি বিলক্ষণ জানেন যে, মামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আমার বাবার নেই, তাই যতবারই বাবা ওই প্রসঙ্গে কথা বলেন ততবারই তিনি মামলার কথা বলে বাবাকে চুপ করিয়ে দেন। একবার গ্রামের প্রধান প্রধান ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশি সভা বসানো হয়, সেখানেও তিনি একই কথা বলেন। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষও খগেনবাবুর কথায় সায় দেন। বাবা আর ঝামেলা বাড়াতে চাননি, কেননা তিনি ভালোভাবেই জানেন - "জোর যার মুলুক তার।" বিপুল এইরকম একজন মানুষের সন্তান। সুতরাং তার মনে দুঃখী জনের প্রতি কোনো সহানুভূতি থাকবে এ আশা করাই বৃথা। অবশ্য এর ব্যতিক্রমও আছে। সবাই যে একই পথের পথিক হবেন এমন কোনো কথা নেই। অনেক অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলেরাও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য তাঁদের সবটা উজাড় করে দিয়েছেন এমন দৃষ্টান্তও আছে। সবই আমার বাবার মুখ থেকে শোনা। তিনি বলেন - সবাইকে একদৃষ্টিতে দেখতে নেই, উদার চিন্তা ও মুক্ত মন নিয়ে মানুষকে বিচার করতে হয়। কার মধ্যে কী সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে তা কে বলতে পারে। এমন একদিন হতে পারে যেদিন এই খগেন বাবুর ছেলে বিপুল বাবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে।
আমি ভাবতাম, বাবার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই অথচ কীভাবে তিনি এত সুন্দরভাবে ভাবতে পারেন। বড়ো হলে আমি আমার বাবার মতো হতে চাই। বাবা আমার আদর্শ, বাবা আমার আইডল।
একদিন হঠাৎ করেই শিউলির মায়ের হৃৎস্পন্দন থেমে গেল। সেদিনের ঘটনা আমি কিছুতেই ভুলতে পারি না। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ কাকিমার কাশির সাথে রক্ত উঠতে শুরু করে, সেই সাথে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট, সারা শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা, সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে। কাকিমা ছটফট করছেন, শিউলি তালপাতার হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছে, কখনো মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, বারবার কান্নাভেজা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করছে - মা তোমার কী হয়েছে, কোথায় কষ্ট হচ্ছে? মাধব কাকা ছুটে এসেছেন আমাদের বাড়িতে। বাবা তাঁর গলার আওয়াজ শোনা মাত্রই ধড়ফড় করে উঠে পড়লেন - কী ব্যাপার মাধব কী হয়েছে, এত রাতে?
- দাদা, শিউলির মাকে বোধহয় বাঁচাতে পারবো না। আপনি একটু আসুন, কী করবো বুঝতে পারছি না।
- কীসব আজেবাজে কথা বলছ, চলো দেখি।
একটা হারিকেন নিয়ে আমিও বাবার সাথে চললাম। আমার বড্ড ভয় করতে লাগলো। মাধব কাকার অভাবের সংসার। কাকিমা রোগগ্রস্ত হলেও মাধব কাকার প্রাণভোমরা তিনি। তাঁর বেঁচে থাকাটা মাধব কাকার মনের জোর অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য মাধব কাকার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা স্মরণে রাখার মতো। তাঁর জন্যই তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। নিজে শরীরের দিকে তাকানোর মতো সময়ও তাঁর নেই। সেই মানুষটা যদি হঠাৎ করে চলে যান তাহলে...
আমরা মাধব কাকার বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই শিউলির চিৎকার আমাদের চমকে দিল। বাবা ছুটে গেলেন। কাকিমার দেহটা ততক্ষণে অসাড় হয়ে গেছে। হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেছে, চোখ দুটো স্থির, বাবা হাত দিয়ে দেখলেন, না, কাকিমা আর ইহজগতে নেই। বাবা স্থানুবৎ দাঁড়িয়ে রইলেন। মাধব কাকা প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। তারপর প্রথম ধাক্কাটা সামলে নিয়ে তিনি একেবারে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন কাকিমার নিথর দেহটার উপর। আমি ভয়ে-বিস্ময়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম। বাবার চোখের কোণটা অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠলো। আমিও ডুকরে কেঁদে উঠলাম।
মাধব কাকার সেই গগনবিদারী আর্তনাদ আর শিউলির বুকফাটা কান্না আজও আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। বড্ড অকালে ঝরে গেলেন তিনি। শুধু তাই নয়, পুরো সংসারটা যেন ইছামতীর জলে ভেসে গেল। কাকি মারা যাওয়ার কয়েক দিন পরে মাধব কাকা দেশান্তরী হলেন, শিউলির ছোটো ভাইটা একপ্রকার না খেতে পেয়েই মারা গেল। প্রথম কয়েকদিন বাবার অনুরোধে মা ওদের দু'জনের জন্য খাবার তৈরী করে দিতেন। তারপর জানিনা কোন এক অজ্ঞাত কারণে কাউকে কিছু না জানিয়ে শিউলি ওর ভাইকে নিয়ে - কোথায় যে হারিয়ে গেল তার হদিশ পাওয়া গেল না। বাবাকে অনেকবার বলেছি শিউলির কথা। বাবাও অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কীভাবে যেন দুটি প্রাণী কর্পূরের মতো উবে গেল! আমার মনের অন্দরমহলে শিউলি একটা বড়ো প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়ে গেল। সে আমার প্রথম প্রেম কীনা জানিনা কিন্তু আমার কৌতূহলী চোখ দুটি আজও ছলছল করে তার জন্য। তারপর আমিও গ্রাম ছেড়ে চলে এলাম। পরে বাবার কাছে শুনেছি ওদের বসতবাড়িটা নাকি খগেন বাবুর কাছে বন্ধক রাখা ছিলো। তাই তিনি সেই বাড়িটার দখল নেন, গ্রামের একটা মানুষও এর প্রতিবাদ করেননি। শুধু আমাকে বাবা বলেছিলেন - এটা বড়ো অন্যায় হয়েছে বাবু, পারলে এর প্রতিকার করিস। আমি দুর্বল তাই পারলাম না। তোর হাতে সেই দায়িত্ব সঁপে দিয়ে গেলাম।
আজ আলোকে দেখে আমার শৈশবের স্মৃতি জেগে উঠলো। আমি ওকে কী বলে সান্ত্বনা দেবো তার ভাষা খুঁজে পেলাম না। আলো কিছু একটা করতে পারলে হয়তো ওর মায়ের অবস্থা শিউলির মায়ের মতো হবে না। গ্রামে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকলেও শহরে কিছুটা হলেও ব্যবস্থা আছে। তাই আলো তার মা’কে চিকিৎসা করানোর জন্য সময় ও সুযোগ দুটোই পাবে। তাছাড়া ও যে ডাক্তার বাবুর কথা বলছে যতদূর শুনেছি তিনি খুব মরমী এবং দয়ালু। নানান সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও কাজকর্মের সঙ্গে তিনি যুক্ত। মায়ের জন্য আলোর দুশ্চিন্তা এবং উৎকণ্ঠা দেখে মনে মনে বললাম - কিছু চিন্তা করিস না আলো তোর মায়ের জন্য ঠিক কোনো না কোনো ব্যবস্থা হয়ে যাবে। সবসময় সবাই হেরে যেতে পারে না।
আলোর মাঝে শিউলির প্রতিচ্ছবি দেখে আমার চোখ দুটি অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠলো। আমার মা কী অবস্থায় আছেন জানিনা। বর্তমানে আমার যা আর্থিক অবস্থা তাতে মা'কে আমার কাছে এনে রাখার দুঃসাহসও দেখাতে পারবো না। সুতরাং অপেক্ষা করা ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই। তবুও মনটাকে সান্ত্বনা দিতে পারি না। হাজার হোক তিনি তো আমার গর্ভধারিণী মা। শিউলি আর আলোর মাঝে আমি খুঁজে ফিরি আমার স্নেহময়ী জননীকে।
(ক্রমশ)