গল্প ও অণুগল্প

ছাড়পত্র (অণুগল্প)



সুজাতা দে


সরকারী চাকুরীতে যতোই তুমি লেখা পরীক্ষায় পাশটা করো লতু, পরিচিতি পত্র লাগবেই লাগবে, ইন্টারভিউতে নয়তো তোমাকে ডাকবেই না।বলেছিল টাইপ ইস্কুলের খগেণদা।

এতো ভারি জ্বালা হোলো, কে তাকে চেনে? সামান্য কাঠের মিস্ত্রি মদনের মেয়ে  লতিকাকে আশার আলো দেখায় খগেণ-ই। 

আমি যতীনদাকে ধরে এম এল এর পরিচয়পত্র বের করে এনে দেব। তোর মতো সুন্দরীর জন্য এটুকু পারবোনা বল? কাল দুপুরে টাইপ ইস্কুল বন্ধ। মাধ্যমিকের পাশ সার্টিফিকেটটা নিয়ে চলে আসবি এখানে। কান এঁটো করা হাসিতে ডিভোর্সি খগেন্দ্রনাথের কুমতলব ধরা পড়ে লতিকার চোখে।

দু-দুটো ইন্টারভিউতে পরিচয়পত্র দেখাতে না পারায় নাকচ হয়ে গেছে চাকুরি দুটো। এবারে তৃতীয় ইন্টারভিউটাও যদি হাতছাড়া হয়ে যায়! 

লতিকার বাবা মৃত্যুশয্যায়, ক্যান্সার পেশেন্ট। বাবার জমানো পুঁজি প্রায় শেষ। দু' দুটো মা-মরা ছোট ভাইবোন পড়ছে স্কুলে। কি করবে যুবতী লতিকা? ওরা যে দিদির মুখে তাকিয়ে। ব্লাউজের বোতামটা খুলতে যেতেই খগেণদার হাতটা সজোরে চেপে ধরেও আলগা করে দেয়, শুধু ওই ভাইবোন দুটোর কথা ভেবে। ওদের সুস্থ জীবন দিতে গেলে দিদিকে এটুকু যে ছাড়তেই হবে।