কবিতা

জীবনানন্দ



হৈমন্তী ভট্টাচার্য


"প্রাণ ভরিয়ে,
    তৃষা হরিয়ে",
যে অনন্ত
    আনন্দ-উৎসার,
নয়ন মেলিয়া
    দেখো আজ,
সে মাধুরীর
    অশেষ‌ সম্ভার!

তোমার মালঞ্চে আজ,
    শাখে শাখে গাহে পাখী,
বহে মৃদুমন্দ দখিনা বাতাস,
অন্তরে বাহিরে তার
স্নিগ্ধ পরশে আজ
    এ মন উদাস!

ফোটা, আধফোটা
    ফুলে ফুলে ঢাকা,
এ মালঞ্চ যেন এক
    নন্দনকানন,
সৃষ্টির রহস্য এ কি?
    অফুরান সুন্দরের
    অপরূপ আবাহন!

নিবিড় শ্যামল-ঘন
    অটবীর গভীর ভাষায়,
এ পৃথ্বীর বাণী যেন
    সুপ্ত থেকে যায়!

মহীরূহ উচ্চশির,
সদম্ভে সে চায় যেন
    গগনেরে ছুঁতে,
স্তব্ধ ধরা চেয়ে রয়,
    এ রহস্য
পারে না বুঝিতে।

সাগরের উত্তাল তরঙ্গ,
    উদ্দাম, দুর্মদ,
দুগ্ধশুভ্র, সফেন,
    শত রঙ্গভঙ্গে,
    নৃত্যতালে,
উচ্ছল, উন্মাদ -
    যেন বয়ে আনে
প্রলয়ের বাণী,
ভীষণ সৌন্দর্য্যমাঝে,
    সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়ের
    ধ্বনি!

এমনই অনন্ত
    আনন্দধারা
    বহে নিরন্তর -
সুখ-দুঃখ-বিষাদ-বেদনা
    মাঝে,
মৃত্যুরে তুচ্ছ করি
    যেথা অসীম, অনন্ত,
    অমর্ত্ত্য রাজে।

চিত্রঋণঃ অন্তর্জাল থেকে প্রাপ্ত।