রাত সাড়ে এগারোটা, পড়তে পড়তে একটু ঢুলুনি এসেছে মধুপীর, হঠাৎই পাশে রাখা মোবাইলটা বেজে উঠল। চমকে উঠে ফোন হাতে নিয়ে দেখল আননোন নাম্বার। লাইনটা কেটে দিল। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন। একই নাম্বার। অবাক হল মধুপী। এত রাতে কে ফোন করছে তাকে। মোবাইল নাম্বার তো হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া আর কেউ জানে না! বিরক্ত হয়ে আবার লাইনটা কেটে দেয় মধুপী। দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে দেখে ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁয়েছে। মনে মনে বলতে থাকে "নাঃ, আজ আর অঙ্কটা মিলল না। ফোনটা পড়ার বারোটা বাজিয়ে দিল"। বই-খাতা গুছিয়ে ঘরের আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়ে সে। সকালে বিছানার পাশে রাখা ছোট্ট টেবিল ঘড়িটার অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙে। অ্যালার্মটা বন্ধ করে কিছুক্ষণ এমনিই শুয়ে এপাশ-ওপাশ করতে থাকে।
"নাঃ পড়তে বসতে হবে। কালকের অঙ্কটা কোথায় গিয়ে যে আটকে গেল। হতচ্ছাড়া ফোন। আজ অঙ্কটা মেলাতেই হবে।" এক ঝটকায় উঠে বসে। হাতমুখ ধুয়ে চা খেয়ে সটান পড়ার টেবিলে।
মধুপী মাধ্যমিকে ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করে সদ্য ক্লাস ইলেভেনে পা রেখেছে রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে পরীক্ষায় প্রথম স্থান তার। ছোট থেকে পড়াশোনাই ওর ধ্যানজ্ঞান। পড়ার টেবিলে সকাল আটটা নাগাদ আবার সেই ফোন। প্রথমবার কেটে দিল লাইনটা। কিছুক্ষণ পর আবার রিং। এবার ফোন ধরে রাগত স্বরে বলল, 'হ্যালো'। ওপাশ থেকে কোনো সাড়া নেই। "হ্যালো। কোনো কথা বলছেন না কেন? কাকে চাই?" এবারও ওপ্রান্তে নীরবতা। রাগ করে ফোনটা নামিয়ে রাখে সে।
"অসহ্য! এই ফোনটা ফেলেই দেবো। যত্তসব বাজে লোকজন কাজের সময় খালি ডিসটার্ব করা..." মনে মনে গজরাতে থাকে মধুপী। বন্ধ করে দেয় মোবাইলের সুইচটা। বিকেলে অঙ্ক স্যারের কাছে টিউশন পড়তে যাওয়া। যদি সবকটা অঙ্ক ও করে না নিয়ে যেতে পারে, কি ভাববেন তিনি! আর অন্যরা যদি পেরে যায়, তাহলে আর লজ্জার সীমা থাকবে না। সবাই ভাববে মাধ্যমিকের রেজাল্টটা নিছক ফ্লুক। এইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে মধুপী আবার পড়ায় নিবিষ্ট হয়। "দূর! কিছুতেই তো এই প্রোবাবিলিটির অঙ্কটা মিলছে না। ঋতমকে একবার ফোন করে দেখি।"
ঋতম মধুপীর সহপাঠী। সে-ও যথেষ্ট ভালো নাম্বার নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছে। যদিও মধুপীর থেকে পাঁচ নাম্বার কম। তবে অঙ্কের ব্যাপারে ঋতমের একটা সহজাত দক্ষতা আছে। অঙ্কস্যারের তাই অত্যন্ত প্রিয়পাত্র সে। মোবাইলের সুইচটা অন করতেই একটা মেসেজ এল সেই আননোন নাম্বার থেকে -
"ফোনটা বন্ধ করলে কেন?"
রাগে ব্রহ্মতালু জ্বলে গেল মধুপীর। মনে মনে গজরাতে থাকে - "আমার ফোন আমি বন্ধ করেছি, তুমি বলার কে বাপু?" মেসেজটা সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করে দিয়ে ঋতমকে ফোন করল সে।
"হ্যালো! ঋতম?"
ওপাশ থেকে উত্তর এল, "হ্যাঁ, মধুপী বল।”
"দেখ না, লাস্টের অঙ্কটা কিছুতেই মিলছে না। কিভাবে করছিস রে?"
ঋতম মধুপীর মতো পড়াশোনা নিয়ে অত সিরিয়াস নয়। স্বভাবমাফিক ইয়ার্কি শুরু করল -
"আরে তুই পারিসনি বালিকা! সে কি কথা! মধুপী মিত্রের অঙ্ক মিলছে না! পৃথিবী থেমে যাবে তো!"
"সব ব্যাপারে ইয়ার্কি মারিস না তো ঋতম। নিজে তো সব অঙ্ক মিলিয়ে দিস, তাই খুব হাসি পাচ্ছে, না?"
মধুপী বন্ধুর উপর রাগ করে। ঋতম মধুপীকে আরও রাগাতে থাকে।
"তুই বলবি কি না বল?” এবার ভীষণ সিরিয়াস মধুপী।
"আচ্ছা বাবা, বলছি বলছি।" ঋতম অঙ্কটা স্টেপ বাই স্টেপ মধুপীকে বলতে থাকে।
"থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। বিকেলে দেখা হচ্ছে"। ফোনটা রেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। চটপট খাতায় অঙ্কটা করে নেয়। এতক্ষণে মন, শরীর দুটোরই আরাম হল। চোখ বুজে চেয়ারে বসে রইল। আবার সেই আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ "কার সাথে কথা বলছিলে এতক্ষণ?" কে এভাবে মেসেজ করতে পারে তাকে ভাববার চেষ্টা করল।
সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা নাগাদ টিউশন থেকে ফিরে টিভির চ্যানেলগুলো সার্ফ করছিল মধুপী। টিভিই দেখা হয় না। তাই বেশীক্ষণ সার্ফ করতেও ভালো লাগেনা তার। মায়ের বানানো চা আর ডিমটোস্ট খেয়ে আবার এসে বসে পড়ার টেবিলে। আনমনেই ফোনটা হাতে তুলে নেয়। নতুন মেসেজ, সেই একই নাম্বার "আজ পিঙ্ক কুর্তিটাতে তোমায় দারুণ দেখাচ্ছিলো।" হতভম্ব হয়ে যায় সে। কে হতে পারে। এমনিতেই মধুপীর বন্ধুবান্ধবের সংখ্যা হাতে গোনা। স্কুল আর প্রাইভেট টিউটরদের কাছে টিউশন পড়তে যাওয়া ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোতেই চায় না সে। স্কুল বা কোচিং ক্লাসে বন্ধুদের আড্ডা-ইয়ার্কিতে তার ভূমিকা নীরব শ্রোতার। সবার সাথে কথা বললেও, নিজের চারপাশে এমন একটা বর্ম তৈরী করে রাখে যা ভেদ করে সমবয়সীরা ওর সাথে স্বচ্ছন্দ হতে পারে না। একমাত্র ঋতমটাই মধুপীকে কেয়ার করে না। একধারসে পিছনে লেগে চলে। দূর থেকে ওকে আসতে দেখলেই শুরু করে "আসছেন আমাদের মিস্ মিটার দ্যা গ্রেট"।
- মধুপী ভাবে তবে কী ঋতম? কিন্তু সামনাসামনি ইয়ার্কি মারলেও ঋতম এরকম করার ছেলে বলে তো মনে হয় না। ঋতম যেরকম স্ট্রেট ফরোয়ার্ড ও তো এরকম আননোন নাম্বার থেকে করবে না। চিন্তর ভাঁজ পড়ল মধুপীর কপালে।
তবে কি কোচিং এর অন্য কেউ! কে হতে পারে? রাত এগারোটার দিকে আবার এল ফোনটা। মধুপী কোনো কথা না বলে ফোনটা রিসিভ করে রেখে দিল।
মনে মনে বলল "নে। এবার বিল উঠলে তোর পয়সা যাবে। আমার কি?" বেশ খানিকক্ষণ বাদে লাইনটা আপনা আপনিই কেটে গেল। রাতে ফোনের সুইচটা অফ করেই শুতে গেল মধুপী।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোনের সুইচটা অন করতেই মেসেজ - "Good Morning Madhu. Have a nice day!"
"দাঁড়া ঘোচাচ্ছি তোর মধু ডাক।" গনগন করতে থাকে মধুপী।
"মা, বাবা কোথায় গো?"
"তোর বাবা একটু বাজারে বেরিয়েছেন। এক্ষুনি ফিরবেন। কেন রে বাবু?" মাকে সে ফোনবৃত্তান্ত বলতে থাকে। মা বোঝেন মেয়ে প্রচণ্ড খেপে আছে।
"ঠিক আছে বাবা ফিরলে নাম্বারটা দেখাস" মা শান্ত করার চেষ্টা করেন মেয়েকে।
বাজার থেকে ফিরতেই বাবাকে গতকাল থেকে আননোন নাম্বারের জ্বালাতনের কথা বলে মধুপী। বাবা নাম্বারটা নিজের ফোন থেকে ডায়াল করেন। কিন্তু ওপাশে রিং হয়েই যায়। কেউ রিসিভ করে না। বাবা হাল ছেড়ে বলেন "ছেড়ে দে মা। এত টেনশন করিস না। ফোনটা তুই রিসিভ না করলে বা মেসেজের কোন রিপ্লাই না দিলে দেখবি আপনা আপনিই ফোন আসা বন্ধ হয়ে যাবে।
সারাদিনে ফোনটা অনেকবার এল। মধুপী একবারও রিসিভ করল না। মেসেজ আসতেই লাগল - "একবার তো হ্যালো বলো। গলাটা খুব শুনতে ইচ্ছে করছে। মিস ইউ মধু।" মধুপী গুরুত্বই দিলনা।
পরের দিন সকালে স্কুল যাওয়ার আগে ফোনটা একবার হাতে নিল। কোন মিসড্ কল বা মেসেজ নেই। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মধুপী। "যাক বাবার দাওয়াইয়ে কাজ হয়েছে"। মনে মনে ভাবে সে। স্কুলে ফোন নিয়ে যাওয়া নিষেধ, তাই বাড়িতেই ফোনটা রেখে যায়।
স্কুল থেকে ফিরেই কেমিস্ট্রির কোচিং। তাড়াহুড়োতে ফোনটা বাড়িতেই ফেলে গেল সে। বাড়ি ফিরতেই মা বকুনি দিলেন "ফোনটা নিতে ভুলে যাস কেন? জানিস না, পৌঁছে ফোন না করলে আমার টেনশন হয়।"
"সরি মা"। ফোনটা হাতে নিয়ে ধীর পায়ে ব্যালকনির চেয়ারে এসে বসে মধুপী। নো মিসড্ কল, নো মেসেজ। আজ কেমন এক ক্লান্তি ঘিরে ধরেছে তাকে। কি হল মধুপীর? অন্যদিন কোচিং থেকে ফিরেই পড়তে বসে। আর আজ কিছুতেই পড়ার টেবিলে যেতে ইচ্ছে করছে না। বসে বসে অন্ধকারে স্ট্রীট লাইটের আলোছায়া মাখা রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যে দু'চোখের পাতা বুজে এসেছে সে জানেই না। ঘুম ভাঙল কপালে মায়ের ছোঁয়া পেয়ে। "তুই এখানে! পড়তে বসিসনি যে! শরীর খারাপ লাগছে?" মা একটু অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলেন।
"না মা, পড়তে ঠিক ইচ্ছে করছে না"
"যা না। একটু টিভি দেখ বা শুয়ে থাক।"
"যাচ্ছি" - বলে আস্তে আস্তে তার ঘরে গিয়ে লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়ল মধুপী।
রাতে ঠিকমতো ঘুম হল না। আপনমনেই ফোনটা হাতে নিয়ে কি যেন খুঁজতে থাকে। কি জন্য যে মনটা এত অস্থির হয়ে আছে ভেবে কুলকিনারা পায়না সে।
খুব ভোরে ঘুম ভাঙল মধুপীর। মা-বাবা এখনও ওঠেনি। কাল রাতে পড়াশোনা হয়নি, তাই আজ দেরী না করে পড়তে বসল সে। খুব তাড়াতাড়ি বইয়ের পাতায় ডুবে যায়। ঘোর কাটে মেসেজ টোনে। তাড়াতাড়ি ফোনটা হাতে তুলে নিল সে।
"কাল সারাদিন তোমার জন্য খুব কষ্ট হয়েছে। সত্যি করে বলো তো, তুমিও কি আমাকে মিস করোনি?" বারবার মেসেজটা পড়তে লাগল মধুপী। অবাক হল। এই মেসেজটার জন্য সে অপেক্ষা করছিল! কই, মেসেজটা আসাতে একটুও রাগ হচ্ছে না তো! আর কি আশ্চর্য! ও প্রান্ত কিভাবে তার মনের কথাটা বুঝে গেল। কি এক অজানা ভয়, ভালোলাগায় মন ভরে গেল মধুপীর। হাত-পাগুলো আর নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। হার্টবিট একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গেছে। শরীরটা যেন শূন্য ভাসছে। নিজেকে কেমন যেন অচেনা লাগছে।
বিকেলে টিউশন যাবার সময় আনমনেই পিঙ্ক কুর্তিটার দিকে হাত চলে গেল মধুপীর। অন্যদিন চুলে চিরুনিই পড়েনা। আজ চুলটা ভালোভাবে আঁচড়ে মুখে হালকা পাউডারের পাফ বুলিয়ে নিল। ঠোঁটে একটু লিপবাম লাগালো।
কোচিং-এর বন্ধুরা আজ ওকে দেখে একটু অবাক হল। মধুপী আজ কেমন ছটফট করছে না!
"আজ পড়তে ইচ্ছে করছে না। বেশী পড়াবেন না স্যার" মধুপীর কথায় অবাক হলেন স্যার।
"সে কি রে তোর পড়তে ইচ্ছে করছে না।"
ঋতম ফুট কাটল "মিস মিটারের মন আজ উড়ু উড়ু।"
"বাজে কথা বলবি না।" ঋতমের দিকে চোখ পাকিয়ে বলল সে।
এক সপ্তাহের মধ্যেই মধুপীর বিরাট পরিবর্তন। মোবাইলটা এখন তার সর্বক্ষণের সঙ্গী। যে মধুপী কোনওদিন পড়াশোনা ছাড়া আর অন্যকিছুর দিকে মন দেয়নি, সে-ই আজকাল পড়ার ফাঁকে রবীন্দ্রসংগীতে ডুব দেয়। সারাটা দিন অপেক্ষা করে থাকে মেসেজের জন্য। ও প্রান্ত চুপ থাকলে এ প্রান্ত থেকেই মেসেজ যায় "কোথায় তুমি? চুপচাপ কেন আজ?" ফোনজ সম্পর্কটা ক্রমশই গাঢ় হতে থাকে।
মধুপী অধীর হয়ে ওঠে ওই প্রান্তের গলা শোনার জন্য। একবার দেখবার জন্য। অনেকবার ফোন করেছে সে কিন্তু রিপ্লাই এসেছে ইনবক্সে। ক্রমশঃ ওই প্রান্তেরও ব্যাকুলতা বাড়তে থাকে। অবশেষে এল সেই মেসেজ, যার অপেক্ষায় দিন গুনছে মধুপী।
"তোমার সাথে খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে। দেখা করবে মধু?"
মধুপী তাড়াতাড়ি টাইপ করে "পরশু দিন সাড়ে পাঁচটার সময় মেট্রো বাজারের কাছে যে কফিশপটা আছে আমি তার সামনে ওয়েট করব।"
মাঝের একটা দিন আনন্দ, উত্তেজনায় কিভাবে যে কাটল মধুপীর। মধুপী আজ সাদা আর বেবি পিঙ্কের ফ্লোরাল লং ফ্রকটা পড়ল। মুখে পাউডার, চোখে হাল্কা কাজল আর ঠোঁটে ন্যাচারাল কালারের লিপগ্লস লাগিয়ে পাঁচটা কুড়ির মধ্যেই কফিশপের সামনে পৌঁছে গেল -
ফোনটা এল - "কোথায় তুমি?"
"এই তো পৌঁছে গেছি। দাঁড়িয়ে আছি কফিশপের সামনে।' উত্তর দিল মধুপী।
"পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করো। আমি এক্ষুনি যাচ্ছি। যতক্ষণ না পৌঁছচ্ছি তুমি আমার সাথে কথা বলতে থাকো, তাহলে আর বোর হবে না।"
"নানা আমি বোর হচ্ছিনা। তুমি রেখে দাও।" গলাটা কোথায় যেন শোনা। কিছুতেই ঠিকঠাক মনে করতে পারছেনা মধুপী।
কথা বলতে বলতে হঠাৎ ফোনের মধ্যে সজোরে একটা গাড়ির ব্রেক কষার আওয়াজ পায় মধুপী। লাইনটা কাটেনি কিন্তু ও প্রান্ত থেকে কোনো সাড়াশব্দ নেই।
"হ্যালো! হ্যালো। কী হল কথা বলছ না কেন?” চেঁচাতে থাকে মধুপী। ও প্রান্ত একেবারে নীরব। হঠাৎ নজরে পরে একটু দূরে কিছু লোক ডানদিকের রাস্তাটাতে ছুটে যাচ্ছে।
"কি হয়েছে ওখানে?" একজনকে জিজ্ঞেস করল সে।
"অ্যাক্সিডেন্ট। একটা ছেলে ফোনে কথা বলতে বলতে হাঁটছিল, পেছন থেকে একটা ট্রাক এসে ধাক্কা মেরেছে।"
মাথাটা ঘুরে ওঠে মধুপীর। দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটতে থাকে দুর্ঘটনাস্থলে। ভীড় ঠেলে সামনে যেতেই দেখে রক্ত ভেসে যাচ্ছে স্নিগ্ধদেবের শরীরটা। কিছু দূরে একগোছা গোলাপ আর চকলেট পড়ে আছে রাস্তার ওপর। স্নিগ্ধদেব! কোচিং এর সব থেকে শান্ত ছেলেটা! কান্নায় ভেঙে পড়ে মধুপী। "স্নিগ্ধ তুই... তুই?" বলতে বলতে স্নিগ্ধদেবের শরীরটা জড়িয়ে ধরে মধুপী। স্নিগ্ধ অস্ফুট চোখে প্রাণভরে দেখতে থাকে মধুপীকে।
চিত্রঃ লেখায় ব্যবহৃত ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) ব্যবহার করে কাল্পনিকভাবে তৈরি।