কবিতা

বছরের বয়সে



সঙ্ঘমিত্রা কুমার


ছুঁয়ে থাকার চেষ্টায় যে বসন্ত বোশেখমুখী
তার সুবাসটুকু নিয়ে বুড়িছোঁয়া আমেজ রেখে
জমকালো রঙিন সাজে
এবার রোদের রক্তচক্ষুর দাপটকে 
মান্যতা দিতে প্রস্তুত প্রকৃতি।
পাড়ায়, মাঠে, দর কষাকষির বাজারে,
ভাষনের মঞ্চে, উল্লাসের শিরোনামে,
কোথাও ত্যাগীর এক কণা হোমানলে
চৈত্রকে সরিয়ে হৈ হৈ করে আসবে বৈশাখ।
শরীরের বলিরেখায় বয়স বাসা বাঁধে বছরের হাত ধরে
বছর তেমন বয়সের ভারে পুরোনো খোলসের ওপর
পরবে নতুনের বেশ।
হালখাতায়, উপচানো ভিড়ে পূজারী
বেশী মূল্যের দক্ষিনায় একটু বেশীই মন্ত্র পড়বেন।
প্রসাদী বড় বাক্স থেকে ক'খানা সন্দেশ
উঠে আসবে পাশে রাখা পাত্রে
ঘেমে স্নান হওয়া নারী-পুরুষ পুজোর ডালা সাজিয়ে
রোদের নীচে লাইনে এগোতে থাকবে;
আর নিতান্তই শিশুরা নতুন জামায়
ছুটে বেড়াবে কোলাহলে।
বোশেখ পড়লো, আজ যে পয়লা!
নবীনকে বরণ মানে
একগলা উচ্ছ্বাস,
ক্যালেণ্ডারের পাতায় দিন বদল মানে
বর্ষ বদলের আর গ্রহনের উন্মাদনায়
কী অপ্রাপ্তি আর জমা-খরচ,
মধুরতা না অম্লের বৈভব
এই একটা দিন ভুলে থাকা।
যুদ্ধ? সে তো হয়েছে তার রীতিতে,
ধস? বান? দুর্ঘটনার ভয়াবহতা?
নতুন বহুতল ভাঙনের চাপায় মৃত্যু?
এ তো হয়েই থাকে।
প্রতিটা বছরের গায়ে এ যে অলঙ্কার!
বছর খতিয়ানে দেখে
অলঙ্কৃতের উৎকর্ষতা, নয়তো
অবক্ষয়ের স্তূপ!
চৌর্যবৃত্তির মূল্যায়ন বছর করে না।
সূর্য যেমন নতুন নয়,
নতুন হয় না তেমন প্রকৃতির কোল।
দৃষ্টি আর বোধই দিতে পারে নতুনের স্বাদ।
একলাই তবে বদলে ফেলি নজরের ধার
আসুক বর্ষ, থাকুক হর্ষ
নতুনভাবে বাঁচি বারবার।

চিত্রঋণঃ অন্তর্জাল থেকে প্রাপ্ত।