কবিতা

জলঙ্গীর কান্না



অচিন্ত্য সাহা


মরা নদীর বুকে পাথর
পাষাণ আকুল ঢেউ,
ছিন্ন বসন স্তব্ধ নয়ন
রুখতে পারে কেউ?
আমার বুকে জড়িয়ে আছে
তোমার মায়ের আঁচল,
তুমি তখন সবুজ তরুণ
আমার বুকের বল।
অসীম অতল পিপাসিত
রুক্ষ শুষ্ক ধরা,
স্নিগ্ধ শীতল কালো জলে
আমার হৃদয় ভরা।
ফুল ফসলে আমার জলে
জীবন পেত ফিরে,
স্বপ্ন আঁখি পিয়াস মেটায়
সৃষ্টি আমার তীরে।
আলোর ঝর্ণা আলপনা দেয়
প্রভাত পাখির গানে,
সূর্য সোনার সোনালী ফুল
আজও আমায় টানে।
কত শত স্মৃতির ফুলে
সিক্ত হৃদয়খানি,
ভাটিয়ালির সেই মিঠে সুর
মান্দাসেতে টানি।
ভোরের আলো ফোটার আগে
সূর্যস্নানের পরে,
মা যে তোমার নূপুর তানে
ফিরতো একলা ঘরে।
ছিন্ন বসন মা যে তোমার
বলত মনের কথা,
শুকনো বুকে লাগতো দোলা
হৃদয়জুড়ে ব্যথা।


হারিয়ে গেছে সেই বুড়িমা
হারাচ্ছি আজ আমি, 
আমার ব্যথার সঙ্গী কেবল
আমার অন্তর্যামী।
তোমরা আমার হৃদয় জুড়ে
থাকবে চিরকাল,
বাঁধ ভেঙে দাও শক্ত হাতে
ভাঙো সেতু বাঁধাল।
জলঙ্গী আজ বলছে ডেকে
এসো বন্ধু সকল,
কুচক্রীদের রোধ করে হও
পবিত্র নির্মল।
জলঙ্গী আজ কাঁদছে কেবল
তোমার সুখের জন্য, 
মুছিয়ে দিয়ে সেই আঁখিজল
হও সকলে ধন্য।

চিত্রঋণঃ অন্তর্জাল থেকে প্রাপ্ত।