আমি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষ খুঁজে চলেছি,
হিংসে-বিদ্বেষ বিহীন নিখাঁদ মানুষ,
যার চোখে দাবানল জ্বলে না, যার চোখ শান্ত শীতল,
যার দিকে তাকালে কালের ধ্বনিও ক্ষীণ হয়ে আসে।
আমি পত্রপল্লবের কাছে প্রশ্ন করেছি,
কোথায় গেলে মেলে এমন মানুষ যার
পায়ের ধ্বনি শুনলে যেন কানে ঝংকার বাজে,
আমি শহরের সবকটা বৃক্ষকে প্রশ্ন করেছি
কোথায় মিলবে সে সৌম্য মানুষের দেখা,
যাকে পেলে শহরজুড়ে মিছিল হবে, দামামা বাজবে।
আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম জন্ম দিয়ে চলেছি কিছু নিরেট পাথর,
যাদের দাবানলে পুড়ে যায় শতাব্দীর সেরা নিদর্শনগুলো,
যাদের হুংকারে কোনো বিপ্লব ঘটে না যুগের,
যাদের পালা-পার্বণ আসে না ঘরে,
একঘেয়ে জীবনযাপনে তারা অভ্যস্ত হয়ে যায়।
আমি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষ খুঁজে চলেছি,
একজন বিদ্রোহী মানুষ, যার ছোঁয়ায় পুড়ে যায় সব কলুষতা,
যার একটা শব্দ ভেঙে দিতে পারে শত জনমের সব জঞ্জাল,
পাখির পালকের মতো যার কোমল হৃদয়,
ক্ষুরের মতো ধারালো যার পায়ের শব্দ।
আমি বৈশাখের ঝড়ের কাছে গেছি, আমি শীতের ঝরা পাতা,
কুয়াশা আর ঘাসে জড়িয়ে থাকা শিশিরের কাছে গেছি,
আমি বসন্তের সুবাস, কচি লতা আর কোকিলের কাছে গেছি,
একটাই কথা নিয়ে,
আমি এক-জীবন ধরে শুধু মানুষ ভিক্ষে চাইছি,
একজন নিখাঁদ মানুষ।
চিত্রঋণঃ অন্তর্জাল থেকে প্রাপ্ত।