কবিতা

কালরাত্রি



অচিন্ত্য সাহা


শ্বাপদের শ্বদন্তগুলো
চকচক করে লালসায়,
মুছে যায় জীবনের সব রঙ,
স্থির বিশ্বাসে আঁকড়ে ধরা
মানুষগুলো হায়েনা হয়ে যায়।

যখন অন্ধকার নামে পৃথিবীর বুকে
শ্বাপদের লোলুপতা
আমার শরীরের রক্ত মাংস
খুবলে খুবলে খায়।
বিস্মৃতির অন্তরালে একাকীত্বের
যন্ত্রণা গুমরে গুমরে কাঁদে,
আমার বিশ্বাসে কালরাত নামে।

শুধু তোমাকে স্বাধীনতা দেবো বলে
গারদের গভীর অন্ধকারে
কুচক্রী ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলাম।

যখন আমার ছিন্ন মস্তক
পাষাণ পুত্তলিকা থেকে ছিটকে গেল,
আমার শরীর তো দূর অস্ত,
কারও চোখ ফেটে এক বিন্দু
রক্ত গড়িয়ে পড়লো না,
নিদেনপক্ষে এক ফোঁটা অশ্রু?

না, নরঘাতক বিশ্বাসঘাতকের
কোনো জীবন হয়না,
কোনো দেশপ্রেম, কোনো সহানুভূতি
কোনো ইতিহাস? না, হয়না।
চর্মচক্ষুতে বা অন্তর্দৃষ্টিতে দেখিনি।

আন্দোলন যদি শুধু লুটপাট,
খুন, রাহাজানি, অগ্নিসংযোগ হয়
তাহলে আমার বিশ্বাস,
কালরাত্রির কালগ্রাসে নিমজ্জিত,
শ্বাপদের লোলুপতায় রক্তাক্ত,
কলঙ্কিত সে আলোড়ন।

সংশয়, সন্দেহ আর হত্যার
ধ্বংসলীলায় বিপর্যস্ত জীবন
আজ ধ্বস্তবিধ্বস্ত, অবিন্যস্ত।
ভয়ংকর অভিশাপ কালরাত্রি।