গাড়ির হর্ন শুনে মহুয়া ডাকল, "মা, ওরা এসে গেছে"। লাবন্য এই দিনটির প্রতীক্ষায় ছিলেন। সুমিত এ বাড়িতে এসেছে কয়েকবার। মহুয়ার সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ গভীরতার কথাও তাঁর অজানা নয়। অল্পবয়সে বাবাকে হারিয়ে মহুয়ার কাছে তার মা বন্ধুর মতো। সুমিতের সঙ্গে মেয়ের পরিচয়, প্রণয় ও ভাবী পরিকল্পনার কথাও লাবন্যর জানা।
সুমিতও মহুয়ার মাকে খুব কাছের মানুষ ভাবে, অল্পবয়সে সে হারিয়েছে তার মা-কে। সুমিতের অভিনব প্রস্তাবে আজ ওর বাবার এ বাড়িতে আসার কথা। সুমিত বলে, "কেন চিরদিন মেয়ের বাবা-মা-ই প্রার্থী হয়ে যাবেন? মেয়েদের সম্মান জানানো আজকের সময় দাবি করে।"
মহুয়া দরজা খুলতেই সুমিত এগিয়ে আসে, "মাসীমা, আমার বাবা অমিত চৌধুরী, আর বাবা, ইনি মহুয়ার মা।"
দুজনেই হাত তুলে প্রতিনমস্কার করতে গিয়ে বিস্ময়াহত।
- বন্যা...!
- তুমি!
সুমিত ইঙ্গিতে পাশে ডেকে আনে মহুয়াকে।
- মৌ তোমাকে বারবার বলেছি, মাসিমাকে প্রথম দিনই খুব চেনা মনে হয়েছিল। ওই চোখের চাহনি কোথায় যেন দেখেছি। বাবার ওয়ালেটে এক তরুণীর ছবি দেখেছিলাম - আজ বুঝলাম উনি তোমার মা।
মহুয়া ও সুমিত অপলকে তাকিয়ে থাকে তাদের মা ও বাবার দিকে। অনেকদিনের অনুত্তর প্রশ্নের উত্তর যেন খুঁজে পেল দুজনে। বিগত যৌবন দুটি মানুষের গভীর সজল বেদন মধুর দৃষ্টির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কখন যেন অজান্তেই তাদের দুজনের হাত মিলে গেল দুজনের হাতে।... চারটি প্রাণের হৃদয় গভীরে তখন নতুন করে লেখা হচ্ছে - পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো ও সবচেয়ে নতুন কবিতা - যার নাম 'ভালোবাসা'।