স্থানীয় খবর
-
বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ প্রভূত উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে 'করুণাময়ী সমন্বয় সমিতি'র উদ্যোগে পালিত হলো বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ২০২৪।
করুণাময়ী ক্রীড়াঙ্গনে ৭ই জানুয়ারি, রবিবার, সকাল ৯টা থেকে বিপুল সংখ্যক ক্রীড়ামোদীদের উপস্থিতিতে শুরু হয়ে যায় ২০২৪-এর জমজমাট ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সমস্ত মাঠ পতাকা দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। অতীব সুদৃশ্য মঞ্চ, মঞ্চের দুদিকে লম্বা টানা তাঁবু, সঙ্গে বসার সুবন্দোবস্ত। সারাদিনব্যাপী প্রতিযোগিতার গুরুদায়িত্বে ছিলেন সাই (SAI)-এর দক্ষ প্রশাসকেরা।
প্রথম ইভেন্ট ছিল, ৫ বছরের নীচে বালিকাদের ২৫ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগীরা স্টার্টিং পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আর পিছনে দাঁড়িয়ে অভিভাবকেরা প্রবলভাবে উৎসাহ দিয়ে চলেছে বাচ্চাদের, বাঁশি বাজলেই যেন জোরে ছুটে প্রথম হয়। এ এক অভাবিত দৃশ্য! কেউ ছুটল, কেউ দাঁড়িয়ে গেল, কেউ মায়ের কোলে উঠে পড়ল। পাঁচ বছরের নীচের বালক বিভাগে একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তির হলো। এই আনন্দঘন মুহূর্তগুলিকে তখন অনেকেই মোবাইল বন্দি করতে ব্যস্ত।
ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আরম্ভের আগে আরেকটা আরম্ভ ছিল, তা ছিল আমাদের প্রবীন আজীবন সদস্য মনোরঞ্জন দাসের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ক্রীড়ামঞ্চে কেক কাটা এবং তাঁর সুস্থ দীর্ঘজীবন কামনা করা।
এরপর ক্রীড়ামঞ্চে আসেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের পৌরমাতা কাকলী সাহা, তিনি উদ্যোক্তা ও ক্রীড়ামোদীদের এই শুভপ্রয়াসে অংশগ্রহণ করার জন্য সাধুবাদ জানান। সমিতির পক্ষ থেকে প্রবীণা ইন্দিরা ব্যানার্জী পৌরমাতাকে পুস্পস্তবক দিয়ে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করেন।
তিন শতাধিক ক্রীড়ামোদী সারাদিন ধরে মোট ২৩টি বিভিন্ন গ্রুপের ইভেন্টে প্রতিযোগিতা করে।
মধ্যাহ্ন বিরতির সময় আসেন প্রধান অতিথি মাননীয় বিধায়ক ও অগ্নিনির্বাপন মন্ত্রী সুজিত বোস। তিনি খেলার মাঠের একজন দক্ষ খেলোয়াড় হওয়ার জন্য, এই ধরণের ক্রীড়ানুষ্ঠানে আসতে বেশি পছন্দ করেন। ওঁনার বক্তব্যে সেই সুর ধরা পড়ে। উপস্থিত মানুষের অনুরোধে, উনি প্রবীণ নাগরিকদের চড়ুইভাতি আয়োজন করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।
সকাল থেকে যারা ক্রীড়া কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের জন্য মধ্যাহ্নভোজনের ব্যবস্থা করেন আমাদের সদস্য অজয় চক্রবর্তী। প্রতিযোগীদের, বিশেষ করে ছোটদের জন্য ২০০ কমলালেবু দিয়ে সাহায্য করেন আরেক সদস্য সোমনাথ বোস। ২৩টি বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় পুরস্কার ছাড়াও প্রত্যেক প্রতিযোগীকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়। 'করুণাময়ী সমন্বয় সমিতি'র ক্রীড়া প্রতিযোগিতার এটাই অন্যতম বৈশিষ্ট্য। প্রতিবারের মতো এবারও কার্তিক চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে তার মেয়ে, জামাই কস্তুরী চ্যাটার্জি ও বিভাস ব্যানার্জী ২৩টি ইভেন্টের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়ের পুরস্কার প্রদান করেন।
ত্রুটিহীন এই প্রতিযোগিতা সর্বাঙ্গসুন্দর হয়েছে, যাদের সহযোগিতায় তাঁরা হলেন সর্বশ্রী অজয় চক্রবর্তী, চিরদীপ গুপ্ত, রামানুজ চ্যাটার্জি, সুশোভন মুখোপাধ্যায়, সাধন পাল, সুমিত ঘোষ, প্রনব সাধন দাস, সঞ্জয় দাস, বাদল বিশ্বাস, শিখা কুমার, ইন্দিরা ব্যানার্জী, গৌরী মজুমদার, সীমা মুস্তাফি, জয়শ্রী বাসু, রূপা পাল, উত্তম বসাক, সোমনাথ বসু, অনিন্দ্য সেন, সুশান্ত সেন, সুবল চন্দ্র দাস, নারায়ণ চন্দ্র দাস, সমর দাস, সিদ্ধার্থ দত্ত, দেবাশিস সাহা, জয়দীপ লাহিড়ী, সুনীতা ঘোষ, সুজিত বোস, বর্ণালী বনিক, ঊষা মান্না, মৃত্যুঞ্জয় মাইতি, তপন দত্ত, শিউলি আদিত্য প্রমুখ।
শেষ অনুষ্ঠান ছিল 'যেমন খুশি সাজো' প্রতিযোগিতা। আগামী বছর আরও সুষ্ঠুভাবে বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনের প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে এদিনের অনুষ্ঠান রাত ৮টায় শেষ হয়।
বিশেষ সংবাদদাতা - সুশোভন মুখোপাধ্যায়ঃ বিগত ১৮ই ডিসেম্বর, সোমবার সল্টলেকের 'ইই' ব্লকের ইউথ গ্রুপ, তাদের ১৪তম স্বাস্থ্য শিবির উপলক্ষে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। এই রক্তদান শিবিরের মোট ৭৫ জন মানুষ রক্তদান করেন। বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অঞ্চল থেকে রক্তদাতাগণ আসেন। পাশের 'ইডি' ব্লক অর্থাৎ করুণাময়ী, 'জিডি' ব্লক, 'ডিএল' ব্লক, নিউটাউন, রাজারহাট প্রভৃতি বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ওইসকল মানুষজন এই রক্তদান শিবিরে যোগদান করেন।
যারা সেদিনের অনুষ্ঠানে রক্তদান করেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আশিষ দাস, ডাম্পি মন্ডল, সুরুচি চ্যাটার্জী, বিশ্বজিৎ দাস, ভাস্কর ব্যানার্জী, সুদীপা ঘোষ, দেবশ্রী রায় ঘোষ, কৌশিক পুরকায়েত, সুরজিৎ সাহা, হিমাংশু দাস, বিশ্বজিৎ দাস। এছাড়া আরও ক্লাব সভ্যগণের মধ্যে ক্লাব সম্পাদক শঙ্খ সরকার, পার্ণব ব্যানার্জী, ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রমুখেরা ছিলেন। রক্তদান শিবির ছাড়াও একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির ও একটি চক্ষু পরীক্ষা শিবিরেরও আয়োজন করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানের সূচনায় একটি বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দমকল ও জরুরী পরিষেবা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মাননীয় সুজিত বসু মহাশয়, বিধাননগর পুর নিগমের মেয়র পারিষদ মাননীয়া তুলসি সিনহা রায় মহাশয়া, স্থানীয় বোরো চেয়ারম্যান মাননীয় রঞ্জন পোদ্দার মহাশয়, স্থানীয় পৌরমাতা কাকলি সাহা মহাশয়া, সমীর মন্ডল প্রমুখেরা।
এই অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে পরিচালনায় যারা অংশ নেন তারা হলেন ক্লাব চেয়ারম্যান সৌমিক ঘোষ, সম্পাদক শঙ্খ সরকার ও রিমো ব্যানার্জী। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুদক্ষভাবে পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখেন সুজন দাস।
সেদিনের অনুষ্ঠানের পূর্ণ সহযোগিতায় ছিল 'রোটারি ক্লাব অফ বালিগঞ্জ' সাউথ সেকশন। এই সংস্থার প্রধান সুরজিৎ কালা ও সন্দীপন দাস মহাশয় এই অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। অনুষ্ঠানের তথ্যাদি সংগ্রহে সহযোগিতা করেন 'ইই' ইউথ গ্রুপের সঞ্জয় দাস।
সংবাদদাতা - তুষার ভট্টাচাৰ্য - বহরমপুরঃ সম্প্রতি ৪১তম রাজ্য বাউল ফকির সম্মেলন (২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩) অনুষ্ঠিত হল বহরমপুরের রবীন্দ্রসদনে। এই সম্মেলনে নদীয়া, বীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়া, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণা, মালদা সহ বিভিন্ন জেলার এবং বাংলাদেশের প্রায় চারশো জন বাউল ফকির উপস্থিত হয়েছিলেন।
এই সম্মেলনের উদ্বোধন করে লোকসংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শক্তিনাথ ঝা বলেন, "জাতপাত, শ্রেণী বিভাজনের উর্দ্ধে উঠে মুক্তমনা বাউল ফকিররা 'সবার উপর মানুষ সত্য' এই লোকবিশ্বাসের বাণী প্রচার করায় শারীরিক নির্যাতন, সামাজিক বয়কটের শিকার হচ্ছেন ইদানীং। আসলে বাউল ফকিররা সাম্প্রদায়িকতা, বিভেদের কথা ভুলে মানবিকতা, সম্প্রীতি, চেতনার কথা গানের মাধ্যমে ব্যক্ত করেন। এইজন্যই তাদেরকে ধর্মীয় মাতব্বরদের রোষের শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত"।
বাউল ফকির সংঘের সম্পাদক আকবর আলি জানান, "বাউল ফকিরদের হেনস্থা এবং সামাজিক বয়কট বন্ধ করার ব্যাপারে প্রশাসনকে সচেষ্ট হতে হবে যাতে করে মুক্তমনা বাউল ফকিররা আন্তরিকভাবে মানবিকতার বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে বাউল গানের মাধ্যমে"।
-
'মধুসূদন সভাগৃহ'র দ্বারোদ্ঘাটন এবং 'অশোকনাথ গৌরীনাথ শাস্ত্রী স্মারক সমিতি'র বিশেষ সভা
সংবাদদাতা - ভারতী পালঃ অশোকনাথ গৌরীনাথ শাস্ত্রী স্মারক সমিতির বিশেষ সভা এবং মধুসূদন সভাগৃহের দ্বারদ্ঘাটন অনুষ্ঠান হলো বিগত ১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৩, মঙ্গলবার।
অশোকনাথ গৌরীনাথ শাস্ত্রীর স্মৃতিরক্ষার্থে এবং সংস্কৃত ভাষার পুনরুত্থানে এই সমিতির কর্ণধার বিমান কুমার ভট্টাচার্যের প্রাণবন্ত ভূমিকা অনস্বীকার্য।
মধুসূদন সভাগৃহ সাজানো হয়েছিল ফুল মালায়, বসার আসন ছিল পর্যাপ্ত। মাইক, ক্যামেরারও সুবন্দোবস্ত ছিল।
অভ্যর্থনায় ছিলেন সন্ধ্যাদি, বিপাশাদি, দেবিকাদি। সমস্ত অতিথিকে গোলাপফুল এবং ক্যালেন্ডার দিয়ে বরণ করা হলো। সঙ্গে দেওয়া হলো জলখাবারের কুপন।
শুরুতে ফিতে কেটে সভাগৃহের উদ্বোধন করেন সংস্থার সভাপতি শান্তিনাথ ঘোষ। পরে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সভাকে আলোকিত করলেন মাননীয় প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেন। তাঁর প্রাঞ্জল ভাষায় তথ্যনিষ্ঠ বক্তব্যে উপস্থিত সকলে ঋদ্ধ হন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অধ্যক্ষ শান্তিনাথ ঘোষ সংস্কৃত ভাষায় তাঁর বক্তব্য পেশ করলেন। সাবলীল ছন্দে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে তাঁর ভাষণ শ্রোতাদের অভিভূত করে। এসেছিলেন গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডাঃ গোপাল মিশ্র, কৃপাসিন্ধু হাইত, সমিতির পত্রিকা-সম্পাদক জয়ন্ত চক্রবর্তী, দেবযানী ঘোষ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
গুণীজন সমাবেশে এবং তাঁদের মূল্যবান তথ্যে সমৃদ্ধ হলেন শ্রোতৃমন্ডলী। সমগ্র অনুষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন সমিতির সভাপতি তিমির বরণ হালদার, আশীষ গিরি।
এছাড়াও নাচ, গান, কবিতাপাঠে মুখরিত ছিল সভাস্থল। সঙ্গীত পরিবেশন করলেন মালা পাল, কবিতা পাঠে ভারতী পাল। প্রায় শতাধিক মানুষ সভায় উপস্থিত ছিলেন। সবাইকে চা, বিস্কুট, মিষ্টি, নিমকি ইত্যাদি দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়।
এমন একটি মনোজ্ঞ সভায় সামিল হতে পেরে সমিতির সদস্যরা যারপরনাই আহ্লাদিত ও ধন্য হলেন।
-
'উদ্দীপন' সাহিত্য পত্রিকার 'মাইকেল মধুসূদন দত্ত সংখ্যা' প্রকাশ অনুষ্ঠান
বিগত রবিবার, ৭ই জানুয়ারি, ২০২৪, দুপুর ৩টায় হাওড়া জেলার জগৎবল্লভপুরে মুন্সীরহাট সাধারণ পাঠাগারের দ্বিতলে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে 'উদ্দীপন' সাহিত্য পত্রিকার 'মাইকেল মধুসূদন দত্ত সংখ্যা' (৮ম সংখ্যা) প্রকাশিত হলো। প্রকাশ করেন বিশিষ্ট পুঁথি গবেষক শ্যামল বেরা মহাশয়। মাইকেল মধুসূদন দত্তকে নিয়ে আলোচনা করেন কবি ও প্রাবন্ধিক আশোক অধিকারী মহাশয়। অনুষ্ঠানে 'উদ্দীপন সাহিত্য পত্রিকা সম্মান ২০২৩' অর্পণ করা হয় বিশিষ্ট কবি অজিত ভড় মহাশয়কে। সম্মান অর্পণ করেন বর্ষীয়ান কবি দিলীপ বসু মহাশয়। সম্মান হিসাবে প্রদান করা হয় মানপত্র, স্মারক, শাল, উত্তরীয়, কলম, পুষ্পস্তবক ও মিষ্টান্ন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত ভাষণ দেন পত্রিকা সম্পাদক প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা পাঠ, আবৃত্তি ও সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে উপস্থিত অতিথিবৃন্দের মনোরঞ্জন করা হয়।
স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সৌমেন চক্রবর্তী, তাপস ঘোষ ও সংহিতা ঘোষাল।
আবৃত্তি করেন ঐশী চ্যাটার্জী, স্থিতধী চ্যাটার্জী ও সৃজিতা শেঠ।
সঙ্গীত পরিবেশন করেন সৌহার্দ্য আদক, মল্লিকা আদক, সোমনাথ চক্রবর্তী ও রামপ্রসাদ মণ্ডল।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন শিল্পী ঘোষাল।
-
'গীতম একাডেমি অফ মিউজিক এন্ড ড্যান্স'-এর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বিগত ২৮শে ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার, বিকেল ৫টা থেকে রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল 'গীতম একাডেমি অফ মিউজিক এন্ড ড্যান্স'-এর বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 'গীতম'-এর কর্ণধার সুমিতা সাহা অনুষ্ঠানটিকে তিনটি পর্বে ভাগ করেন। প্রথম পর্বে ছিল শাস্ত্রীয় নৃত্য, দ্বিতীয় পর্বে ছিল রবীন্দ্রনাথের নাটক 'শাস্তি' ও তৃতীয় পর্বে ছিল নৃত্যনাট্য, বিষয়ঃ সবুজ ধ্বংসলীলাতে প্রকৃতি মা তার সন্তানদের কাছেই অবহেলিত। যাকে বলে জমজমাট এক অনুষ্ঠান।
প্রথম পর্বের শাস্ত্রীয় নৃত্যের শুরু হয়েছিল অঙ্গীকাম, মহাগণপতি, নাগেন্দ্র, শিব তান্ডব ও ওই গিরি দিয়ে শেষ। মঞ্চজুড়ে শিল্পীদের নৃত্য দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়ে নেয়। নৃত্যশিল্পীরা ছিলেন যথাক্রমে স্বাতী, নলিন, বিপাশা, ভেদিকা, সাগরিকা, মোনালিশা, সোমা, আরাধ্যা, আকাঙ্খা, অরিমিতা, মৌমিতা, পল্লবী, বর্ণালী, নিবেদিতা, উজানী, রায়া, গর্বিতা, প্রিয়ন্তী, মীনা ও সুমিতা সাহা।
দ্বিতীয় পর্বে ছিল 'ইছাপুর পায়েল নৃত্য শিক্ষাকেন্দ্র ও ড্রামা ট্রুপ'-এর পরিবেশনায় এবং শান্তি মণ্ডলের পরিচালনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'শাস্তি' নাটক। এটিও দর্শকদের মনে বিশেষভাবে সাড়া ফেলেছিল সেদিন। অভিনয়ে ছিলেন -
দুঃখিরামঃ গৌতম চাকী
বড়বউ - রাধাঃ তানিয়া দে
ছিদেমঃ অজয় মুখার্জী
ছোটবউ - চন্দনাঃ শ্বেতা ঘোষাল
নায়েবঃ প্রসেনজিত সরকার
লেঠেলঃ তাপস চক্রবর্তী
জেলারঃ সৌমেন মুখার্জী
রুপসজ্জাঃ শ্রীমন্ত দাস
পোষাক পরিকল্পনাঃ তরুণাভ পুরকায়েত
আবহঃ সুব্রত মন্ডল
আলো প্রক্ষেপনঃ গোপাল দাঁ
নাট্যরূপঃ গৌতম রায়
সহ-পরিচালনাঃ প্রতাপ মুখার্জী
দিন দিন যে সমাজের অবক্ষয় তার পারিপার্শ্বিক ছাপ এখন আমাদেরই বাড়ির দোরগড়ায় এসে গেছে। কিছু মানুষের তাদের স্বার্থপরতায় পরিবেশ আজ দূষিত হয়ে চলেছে। খোলা আকাশ, সবুজায়ন তাদের পছন্দ নয়। এক জায়গাতে না পারলে, অন্য জায়গায় ধ্বংসের হাত বাড়িয়ে দেয়। এতে কিছু বাহ্যিক সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক কিন্তু মননে নয়, তারাও অবলীলায় যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। হয়তো তাদেরও স্বার্থ সিদ্ধির চিন্তা ভাবনা সেখানে প্রসারিত।
'Mother earth and us' অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল মান এবং হুশ দুটোই খুইয়ে সবুজের ধ্বংসলীলাতে যারা মেতেছে তাদের আয়ু আর বেশিদিন নেই, কারণ তাদের পরবর্তী প্রজন্মের মানুষেরা দূষণমুক্ত পৃথিবীর সন্ধানে নির্বিচারে সবুজের এই ধ্বংসলীলা চিরতরে বন্ধ করে দেবে।
'গীতম'-এর বার্তা ছিল যে, প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মা ও সন্তানের মতো। প্রকৃতি মা তার সন্তানদের যেমন খোলা আকাশ, সুশীতল নির্মল বায়ু, বিশুদ্ধ ঝর্ণার দিয়ে পরিপুষ্ট করছে, তেমনই সন্তানদের উচিত প্রকৃতি মাকেও সর্বশক্তি দিয়ে রক্ষা করা, তাকে কোনোরকম আঘাত না করা।
এখানে একটাই আবেদন, আসুন সংগঠন তৈরি করি এবং কিছু করে দেখাই। বাড়ির চারপাশ, রাস্তার চারপাশ, সমাজের চারপাশ সৌন্দর্যমন্ডিত ও সবুজস্নিগ্ধ করে গড়ে তুলি।
-
সাগরিকা অঞ্জনের ৪৭তম বিবাহবার্ষিকী
সংবাদদাতা - ডঃ মীনাক্ষী সিনহাঃ দিনটি ছিল উৎসবের। ১২ই ডিসেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার। সাগরিকা ও অঞ্জন মিত্রের ৪৭তম শুভবিবাহবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এক হিমেল বাসররাত যেন ফিরে এল জাদুমন্ত্রবলে, প্রিয়জনের সমবেত শুভেচ্ছায়।
দুজনের মালাবদল, উলুধ্বনি ও শুভশঙ্খনাদসহ অতীত স্মৃতির পুনরাভিনয় হলো তাঁদের নিজস্ব বাসভবনে (এবি-২৮, সল্টলেক, কোলকাতা-৭০০০৬৪)।
তারপর সল্টলেক 'এএ' ব্লকের সুসজ্জিত নবনির্মিত ২৫, মেন স্ট্রীট ক্যাফেতে হল সমারোহময় উদযাপন। সেই আনন্দসন্ধ্যায় এসেছিলেন বিকেলে ভোরের ফুলের সদস্যরা, যাঁরা জীবন সায়াহ্নেও ভোরের পুষ্পসুবাসে সুরভিত। সাগরিকা ও অঞ্জনের শুভাকাঙ্খী বন্ধুজনে যোগ দিয়ে গানে, গল্পে, কবিতায় ও আলাপনে ভরে তুলেছিলেন বিবাহের জন্মদিনের আনন্দসন্ধ্যা। সঙ্গে ছিলেন সমন্বয় ওয়েব ম্যাগাজিনের সম্পাদক সুদীপ ধর, সাগরিকার প্রান প্রতিমা সিমরণ ও তার বাবা-মা, মিত্র বাড়ির কর্মীবৃন্দ। উজ্জ্বল উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানকে প্রানময় করে তুলেছিলেন পৌরমাতা শ্রীমতী রত্না ভৌমিক।
প্রথাগত কেক কাটা দিয়ে যার শুরু, মুখরোচক রসনালোভন আহার্যে তার প্রিয় পরিণতি। ক্যাফের প্রধান শ্রী পিনাকী দেবের অসামান্য আয়োজন ও আপ্যায়নে ভরে উঠেছিল সান্ধ্যপ্রহর। মধ্যমনি অবশ্যই স্মৃতিসুখনন্দিত দম্পতি সাগরিকা ও অঞ্জন।... এই দিনটিতে তাঁরা যেমন বন্ধু প্রিয়জনেদের নিয়ে আনন্দ প্রহর কাটালেন, সেই সঙ্গে শুভকামনার মঙ্গলময় উপচারে ভরে দিলেন দত্তাবাদের 'প্রচেষ্টা' সংস্থাকে।
তা-থৈ কালচারাল একাডেমির প্রতিষ্ঠাত্রী, বিকেলে ভোরের ফুলের প্রস্ফুটিত পুষ্পমঞ্জরী শ্রীমতী সাগরিকা মিত্র সকলকে উপহার দিলেন সুরভিত পুষ্পমালিকা। অঞ্জন-সাগরিকার বিবাহবার্ষিকীর আনন্দযজ্ঞে সেদিন সার্থক হলো সবার নিমন্ত্রণ।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সল্টলেকের করুণাময়ীর 'জি' ব্লকের বুকে অকস্মাৎ ঝড় বয়ে গেল। মাত্র ৫৫ বছর বয়সে প্রণব তপাদার, যিনি 'বাপি' নামে এলাকায় বহুল পরিচিত ছিলেন, হঠাৎ করে ইহলোক ত্যাগ করে পরলোকের পথে পাড়ি দেন। চারপাশে এতো বয়োজ্যোষ্ঠ মানুষকে ফেলে রেখে তাঁর এভাবে চলে যাওয়া, কেউ মেনে নিতে পারেনি। তাই তাঁকে শেষবারের মতো চোখের দেখা দেখতে, তাঁর মরদেহ ঘিরে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটেছিল।
একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে করুণাময়ী ও সংলগ্ন এলাকায় তাঁর কর্মকান্ড বিস্তৃত ছিল। বন্ধুবৎসল হাসিখুশি মানুষটি এলাকার সমস্ত রকমের সামাজিক কাজে যুক্ত থাকতেন। প্রচারের আলো থেকে দূরে থাকতেই বেশি পছন্দ করতেন। নীরবে গরীব মানুষের পাশে দাঁড়ানো, বিশেষ করে করোনার সময়ে অভাবী মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। বয়স্ক মানুষদের প্রতি সম্মান ও সহানুভূতি, বন্ধুপ্রীতি, বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো, খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ, সাধারণ জ্ঞানের ওপর দখল, যথেষ্ট রাজনীতি সচেতন, ভ্রমনপিপাসু, দ্রষ্টব্য স্থান সম্বন্ধে আগাম জ্ঞান অর্জন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অনুপ্রেরণা - এ জাতীয় একাধিক গুণাবলীর জন্য এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত ছিলেন।
ক্যালকাটা বয়েজে স্কুলজীবন, মার্কেটিং নিয়ে এম.বি.এ. পাশ করে বাবার ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবসায় যোগদান। বাবার মৃত্যুর পরে নিজের ব্যবসায় মনোনিবেশ। লরি, কেবল ইত্যাদি ব্যবসায় জড়িয়ে পড়া।
লোকনাথ বাবার ভক্ত, অত্যন্ত কর্মঠ প্রণব তপাদার অল্প বয়সে ফেলে রেখে যান স্ত্রী মৌসুমী, প্রতিষ্ঠিত ছেলে প্রণয় ও মেয়ে ঐশ্বর্য তপাদারকে।
'করুণাময়ী সমন্বয় সমিতি' এই পরিসরে প্রণব তপাদারের বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছে এবং পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।