স্থানীয় খবর
সংবাদদাতা - সুশোভন মুখোপাধ্যায়ঃ 'স্বস্তিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রাঃ লিঃ'-র কর্ণধার অশোক পাঁজার আহ্বানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মদিবস উপলক্ষে বিশাল করে আয়োজিত হয়ে গেল কবিপ্রণাম অনুষ্ঠান।
২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ (ইং ৮ই মে, ২০২৪) শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিডি প্রেক্ষাগৃহে সকাল ৭-৩০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন চলে প্রথম সারির শিল্পীদের নিয়ে আবৃত্তি, গান, শ্রুতিনাটক ও নৃত্যনাট্যের মনকাড়া অনুষ্ঠান, দর্শকেরা বিভোর হয়ে এইসকল অনুষ্ঠানগুলি উপভোগ করেন, সে' কারণে ঘনঘন করতালিতে পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ মুখরিত হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে ছিলেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, রূপঙ্কর বাগচী, মনোময় ভট্টাচার্য, শম্পা কুন্ডু, শ্রাবণী সেন, শ্রেয়া গুহঠাকুরতা, অগ্নিভ বন্দোপাধ্যায়, প্রবুদ্ধ রাহা, শহিলা পাঁজা, দেবশ্রী বিশ্বাস, দেবারতী সোম, সুমন পান্থী, প্রসেনজিত চক্রবর্তী, স্বপন সোম, দীপাবলী দত্ত, অজয় কুমার ঘোষ, সুতপা দত্তভান্ডারী, দেবব্রত বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ।
বাচিক শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন ব্রততী বন্দোপাধ্যায়, শোভনসুন্দর বসু, বিশ্বজিত চক্রবর্তী, দেবাশীষ কুমার, দেবযানী কুমার, শুভদীপ চক্রবর্তী, মধুমিতা বসু, দেবাশীষ কুমার বসু প্রমুখ। বাচিক শিল্পীরা কবিতার মধ্যে প্রবেশ করলেই তা শ্রোতাদের দেহ-মন রোমাঞ্চিত করে দেয়। প্রেক্ষাগৃহে দর্শকাসনে এই শিহরণ বয়ে যেতে দেখা গেছে।
পরিশেষে এষা গোস্বামীর পরিচালনায় পরিবেশিত হয় রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য 'শ্যামা'। এই মনোমুগ্ধকর নৃত্যনাট্যের কুশীলবেরা দর্শকদের অভিভূত করে রাখেন। একবারও মনে হয় না এতবার দেখা নৃত্যনাট্য! মনে হয় যেন নতুন করে দেখছি। তুমুল করতালির মাধ্যমে দর্শক-শ্রোতারা সমস্ত অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন, বিশেষ করে উদ্যোক্তাদের এত উচ্চমানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করার জন্য সকলে সাধুবাদ জানান।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী তমালী ঘোষ ও পম্পিয়া বসু। ওঁনারা সুচারুভাবে সঞ্চালনা করে এদিনের অনুষ্ঠানকে আরও মনোজ্ঞ করে তুলেছেন।
সংবাদদাতা - সুশোভন মুখোপাধ্যায়ঃ পদ্মশ্রী সুচিত্রা মিত্রের জন্মশতবর্ষে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ও স্মরণ করে 'সল্টলেক রেনেসাঁ'র উদ্যোগে আয়োজিত হয় রক্তদান উৎসব, ২০২৪। মহান মে দিবসে সকাল ৯টা থেকে করুণাময়ী খেলার মাঠে শুরু হয়ে যায় এই মহতী অনুষ্ঠান। একদিকে যেমন ইচ্ছুক রক্তদাতারা রক্ত দিতে থাকেন, অন্যদিকে ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিকের সহযোগিতায় বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। স্থানীয় প্রচুর মানুষ এই স্বাস্থ্য পরিষেবা ও বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষার সুযোগ নেন। আরেকদিকে ছিল বড় মঞ্চ করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বড় আসর।
গ্রীষ্মের দাবদাহ ও ব্যতিক্রমী উত্তপ্ত আবহাওয়ার মধ্যেও প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছিল। মাননীয় দমকল ও জরুরী পরিষেবা মন্ত্রী সুজিত বোস প্রধান অতিথির ভাষণে এই ধরণের সামাজিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশেষকরে গরমের সময়ে রক্তের সংকট সুতীব্র হয়, এই সময়ে রক্তদাতা জীবনদাতার ভূমিকা নেয়। তিনি ভবিষ্যতে এই ধরণের কার্যক্রমে আরো বেশি সহায়তার আশ্বাস দেন। এছাড়া এই শুভপ্রচেষ্টাকে উৎসাহ দিতে এগিয়ে আসেন মেয়র পারিষদ সদস্য তুলসী সিনহা রায়, বোরো চেয়ারম্যান রঞ্জন পোদ্দার ও পৌরমাতা কাকলি সাহা। কফি হাউস সোস্যাল সার্ভিস এসোসিয়েশনের অচিন্ত্য লাহা সংক্ষিপ্ত ভাষণে রক্তদানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। রেনেসাঁর সম্পাদক রামানুজ চ্যাটার্জি অতিথিদের উত্তরীয়, পুষ্পস্তবক ও স্মারক দিয়ে সম্বর্ধিত করেন।
সাংস্কৃতিক মঞ্চে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত চলে নিরবচ্ছিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যে সমস্ত সংস্থা এখানে অংশগ্রহণ করেন, যথাক্রমে তার হলেন আনন্দম, সংলাপ, মন্তাজ, হাতে খড়ি কবিতার ক্লাশ, খোয়াই, স্বরলিপি, প্যাসন মিউজিক্যাল ব্যান্ড, আমরা ক'জন, পদক্ষেপ। একক নৃত্যে ছিলেন অহনা মুখার্জি। প্রতিটি অনুষ্ঠানই দর্শক, শ্রোতাদের মনোরঞ্জনে সমর্থ হয়। বিশেষকরে ইন্দিরা বন্দোপাধ্যায়ের পরিচালিত আনন্দম, অমিয়া চক্রবর্তী পরিচালিত খোয়াই ও চৈতি রায় পরিচালিত প্যাসন মিউজিক্যাল ব্যান্ড এই অনুষ্ঠানে আলাদা মাত্রা যোগ করে দেয়। প্রত্যেক সংস্থাকে রেনেসাঁর তরফ থেকে স্মারক ও ফুড প্যাকেট দিয়ে সম্বর্ধিত করা হয়।
দুপুর ২-৩০টায় জানা যায় ৭০ জন নারী, পুরুষ রক্তদান করেছেন। তাদের সকলকেই স্মারক, ফুড প্যাকেট ও রক্তদাতা শংসাপত্র দেওয়া হয়। সল্টলেক রেনেসাঁর যে সমস্ত কর্মকর্তারা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২-৩০ পর্যন্ত উপস্থিত ছিল, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুষ্মন্ত কেডিয়া, সঙ্করর্ষণ সান্যাল, তপোব্রত সরকার, সত্য হালদার, রাজর্ষি দত্ত রায়, সদ্রুল ইসলাম, রাজ পোদ্দার, রমেন মণ্ডল, দেবাশিস চ্যাটার্জি, অভিক মুখার্জি, সূর্য ভট্টাচার্য, আকাশ পাণ্ডে, শিখা কাঙ্কসাল, কঙ্ক শীল ও শুভ।
ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক এন্ড হসপিটাল, কফি হাউস সোস্যাল সার্ভিস এসোসিয়েশন, নীলরতন সরকার হসপিটাল ও এসোসিয়েশন অফ ভলান্টারি ব্লাড ডোনারস ওয়েস্ট বেঙ্গল এই অনুষ্ঠানে ওতপ্রোতপ্রতভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
-
পন্ডিত অশোকনাথ শাস্ত্রীর ১২০তম জন্মদিবস পালন
সংবাদদাতা - ভারতী পালঃ গত ১৯শে এপ্রিল পন্ডিত অশোক নাথ শাস্ত্রীর ১২০তম জন্মবর্ষ পালিত হল মানিকতলার মধুসূদন সভাগৃহে। এত দাবদাহ সত্ত্বেও বহু বিদগ্ধ জনের উপস্থিতিতে সভা সরগরম হয়েছিল।
সভার সূচনা হয়েছিল সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার ভট্টাচার্যের বক্তব্য দিয়ে। তিনি তার ভাষণে রাজা সুরথ প্রবর্তিত বাসন্তী পূজা উপলক্ষ্যে তিনদিন ছুটির আবেদন রেখেছেন। এবছর রাম নবমীর ছুটি ঘোষিত হওয়াতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেন শারীরিক অসুস্থতার জন্য উপস্থিত থাকতে না পারলেও পন্ডিত অশোকনাথ শাস্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে তথ্য সমৃদ্ধ বক্তব্য রাখেন আলিপুর বার্তা সম্পাদক ডঃ জয়ন্ত চৌধুরী। অনেক অজানা তথ্য জানার মধ্য দিয়ে সভায় উপস্থিত শ্রোতারা ঋদ্ধ হন। সভায় উপস্থিত অনেকের জিজ্ঞাসার উত্তরে দীর্ঘ কথনের প্রয়োজন পরে, এতৎসত্বেও সভাস্থ সকলে মোহিত হয়ে শুনছিলেন।
এরপর বক্তব্য রাখেন প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং আইনজ্ঞ কৃপাসিন্ধু হাইত। সম্রাট অশোক এবং অশোকনাথ সম্পর্কে তার বক্তব্য যথেষ্ট হৃদয়গ্রাহী হয়।
থি এ লাভার্সের ভর্গোনাথ ভট্টাচার্য অল্প কথায়, সরস ভঙ্গীতে পন্ডিত অশোকনাথ সম্পর্কে বলেন কিছু কথা।
পত্রিকা সম্পাদক জয়ন্ত চক্রবর্তী তার সুচিন্তিত মতামত মেলে ধরলেন শ্রোতাদের কাছে।
সঙ্গীত ও কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে নব বৈশাখের এক মনোরম সন্ধ্যা উৎযাপিত হয়। সভার মাঝখানে চা, বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়িত করেন সন্ধ্যা হালদার। উপস্থিত সকলকেই মিষ্টিমুখ করানো হয়।
অনেকেই বিমান ভট্টাচার্যকে ধন্যবাদ জানান এমন একটি অনুষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দেবার জন্য। বিমান ভট্টাচার্যও ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও অনুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রতিশ্রুতি দেন।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মণিপাল হাসপাতালের তরফ থেকে ২৮শে এপ্রিল, রবিবার, সকাল ১১-৩০টায় স্টেডেল হোটেলে শুরু হয় আপৎকালীন সময়ে স্বাস্থ্যরক্ষা সংক্রান্ত মনোজ্ঞ আলোচনা সভা, বিশেষ করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, হঠাৎ করে প্রতিবেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে কিভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন, সে বিষয়ে বিশদে আলোচনা।
কোলকাতার আমরি হাসপাতাল, কলম্বিয়া হাসপাতাল এরকম একাধিক হাসপাতাল মণিপাল হাসপাতালের পরিচালনায় এসেছে। ভারতের বৃহত্তম প্রাইভেট হাসপাতাল গ্রুপ হিসেবে মণিপাল হাসপাতাল সারা দেশে চিহ্নিত হয়ে গেছে। ১৭টি বড় শহরে ৩৩টি হাসপাতালের ৯৫০০ বেশি শয্যা নিয়ে এবং ৫০০০ এর বেশি অভিজ্ঞ ডাক্তার, ২০০০০ এর বেশি দক্ষ কর্মচারী সহযোগে ইতিমধ্যে ৪,৫০,০০০ রোগীর পরিষেবা দিয়েছে।
মণিপাল হাসপাতালের তরফ থেকে ডাঃ মাবেল ভাসনায়েক, ডাঃ রাজর্ষি রায়, ডাঃ দেবরাজ যশ ও ডাঃ অন্তরিক্ষ বরদোলুই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। বিধাননগর ও তৎসংলগ্ন এলাকার সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই গঠনমূলক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। প্রধান অতিথির সংক্ষিপ্ত ভাষণে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ সুচিকিৎসা প্রদানের আবেদন করেন। উপস্থিত শ্রোতারা প্রবল করতালির মাধ্যমে দেবাশিস সেনের বক্তব্যকে অনুমোদন করেন। এরপর ছিল আকর্ষণীয় প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে আলোচনা সভা। প্রাণবন্ত এই আলোচনায় দুটি বিষয় প্রাধান্য পায়। ১) অতি প্রবীণ নাগরিকরা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়িতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে পরিষেবা। ২) ফ্রী অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা।
পরিশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপক প্রস্তাব প্রদানের পর উপস্থিত অতিথি, অভ্যাগতদের মধ্যাহ্ন ভোজনে আপ্যায়িত করা হয়।